গর্জনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী নেতার বিষয়ে অপবাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া

গর্জনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী নেতার বিষয়ে অপবাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া
রামু উপজেলার গর্জনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী নেতার বিষয়ে 'অপবাদ রটানোর' জের ধরে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।  গত ৩ মে রাতে দু'দলের একখন্ড জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট ঘটনায় এর সূত্রপাত হয়। ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন,গর্জনিয়া বাজারের কিছু লোকজন দীর্ঘদিন ধরে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে অবৈধ ভূমি দখল ও মিথ্যা মামলা করে আসছে । এতে ক্ষতিগ্রস্থ হন ব্যবসায়ী আবু তাহের কোম্পানী ও মাস্টার  ফয়জুল হাসানসহ অনেকে। সর্বশেষ হলেন ব্যবসায়ী আবু ঈসা। 

কয়েকজন ব্যবসায়ীর অভিযোগ করে জানান, ওই চক্রটি এসব অপকর্ম আসছিল জাল কাগজপত্র ও নামে বেনামে ওয়ারিশ বনে। আর  ফাঁদপাতা, মিথ্যা নাটক সাজানো, অপবাদ রটানো ,মিথ্যা মামলা ও নারী ব্যবহার করা তাদের মূল হাতিয়ার । এভাবে মানুষকে হয়রানী করার কারণে  ব্যবসায়ীরা বিরক্ত। কারণ এ ধরণের ঘটনার হয়রানীতে পড়ে  নি:স্ব হয়ে গেছে অনেক ব্যবসায়ীও। কেউ মধ্যস্থতা করতে চাইলে তাদেরও হয়রানী করে তারা। 
গর্জনিয়া বাজারের দক্ষিণের গলির (ছাগল ও মুরগীর বাজার গলি ) ব্যবসায়ী নূরুল কবির ও আলাউদ্দিনসহ একাধিক ব্যবসায়ী নেতা অভিযোগ করে বলেন, মৃত নুর আহমদের ছেলে রশিদ আহমদের ভাই নুরুল হাকিম পরিবার এ ধরণের একটি ঘটনা ঘটায় গত ৩ মে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে। এতে তাদের ( রশিদ আহমদ পক্ষ) বিক্রিত জমি নিয়ে ওই জমির  ক্রেতা জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ীর মধ্যকার দু'পক্ষের ঝগড়া বাঁধার উপক্রম দেখা দিলে ব্যবসায়ী নেতারা তাতে বাঁধা দেন। যার কারণে বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি সেদিন । আর এসব নেতাদের মধ্য উল্লেখযোগ্য হলেন, বাজার ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এরশাদ উল্লাহ ও ব্যবসায়ী নেতা আবু ঈসাসহ অনেকে৷ উদ্ভুত এ ঘটনা বন্ধে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেন সেদিন ব্যবসায়ী আবু ঈসা। যা উপস্থিত ব্যবসায়ীরা দেখে তাকে ধন্যবাদও দিয়েছেন। কিন্ত এতে খুশি হতে পারেননি রশিদ আহমদ ও  নুরুল হাকিম পরিবার। 
স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে জানান, রশিদ আহমদ ও  নুরুল হাকিম পরিবার পুর্বপরিকল্পিতভাবে  জমি/দোকান দখলে নিতে সেদিন  ৬/৭ জন নারী ও সমসংখ্যক যুবকের হাতে রড, লম্বা দা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে দুরের চাকমারকাটা গ্রাম থেকে গর্জনিয়া বাজারের জনবহুল এ এলাকায় প্রকাশ্যে ভাড়া করে  নিয়ে আসেন। এ কারণেই শুরুতেই নারী সদস্যদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে হাঙ্গামা ও হৈ হুল্লোড় শুরু করে তারা। যা দেখে বাজারে থাকা লোকজন পালানোর চেষ্টা করলে ব্যবসায়ী নেতারা ব্যবসার ক্ষতির চিন্তা করে সমূহ হাঙ্গামা বন্ধ করে দেন বেশ কষ্টে। যাতে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন ব্যবসায়ী নেতা আবু ঈসা, এরশাদ উল্লাহ ও নুর কবির সহ অনেকে। আর এতে বিক্ষুব্ধ হন রশিদ আহমদের ভাই নূরুল হাকিম  পরিবার।  তারা এ বিষয়টাকে ঘটনা সাজিয়ে গত সোমবার দৈনিক কক্সবাজার সহ কয়েকটি গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে প্রচার করে সম্পুর্ণ উল্টোভাবে। এ কান্ডে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন এ বাজারের ব্যবসায়ীরা। এ বিষয় নিয়ে আগামী শুক্রবার (৯ মে) স্থানীয় শালিসি বৈঠকের কথা রয়েছে।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, মূলত রশিদ আহমদ ও নুরুল হাকিম পক্ষ এক সময় এ বাজারের দক্ষিণাংশের বিরোধীয় জমির মধ্যে কিছু জমির মালিক ছিল ওয়ারিশী ও ক্রয় সূত্রে। যা তারা বেশ আগেই বিক্রি করে দেন বিভিন্ন লোকজনকে। 
এমন কি পুর্বপুরুষ ও নিজদের  বিক্রিত জমিকে ভূয়া খতিয়ান সৃজন করে একাধিকবার বিক্রি করার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। 
আবার অনেক জমি বিক্রি করে দেন নিজেদের ভাগের জমির আরো বেশী পরিমান। এখন জমির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে লোভের সৃষ্টি হওয়ায় তারা প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ীরা। 
ব্যবসায়ী আবু ঈসা বলেন, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে এখানে করে আসছেন। ছোটখাট সমস্যার সমাধানো করেন। ৩ মে রাতেও ব্যবসায়ী ডাকে সাড়া দিয়ে ঝগড়া মিমাংসা করে দেন। অথচ তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। 
এদিকে ভূক্তভোগীরা জানান, রশিদ আহমদ ও নুরুল হাকিমদের দাবী করা বিরোধীয় জমির বিষয়ে  ককসবাজারের  যুগ্ন জেলা জজ আদালত (২য় আদালত) গত ৩ মে তারিখের সেই বিরোধীয় জমিতে প্রবেশ না করতে বা দখলে না যেতে বা অন্য কোন অপতৎপরতা না চালাতে রশিদ আহমদগং এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। যার আদেশ নং-১০ ( ৯ মার্চ ২০২৫ ইংরেজি)। 
অপর দিকে গত ৩ মে রাতের ঘটনার বিষয়ে গর্জনিয়া বাজার ব্যবসায়ী ও মালিক সমিতির সভাপতি এরশাদ উল্লাহ বলেন, আবু ঈসা একজন সৎ ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে তিনি সে দিনের দু'পক্ষের মারামারির বড় ঘটনাটি ঘটতে দেয় নি। দু'পক্ষকে থামায়। অথচ তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় দুর্নাম রটালো  রশিদ আহমদ ও নুরুল হাকিম পরিবার। যা মোটেও ঠিক হয়নি। তিনি নিরপরাধ। তিনি ব্যবসায়ীদের হয়রানী না করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে রশিদ আহমদ ও  নুরুল হাকিম পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে তাদের বক্তব্য পাওয়া গেলে তা গুরুত্বের সাথে ছাপানো হবে।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম

© 2025 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.