ঐতিহ্যময় ক্রীড়াঙ্গন কক্সবাজার স্টেডিয়াম

ঐতিহ্যময় ক্রীড়াঙ্গন কক্সবাজার স্টেডিয়াম
অধ্যাপক রায়হান উদ্দিন :

সাগর পাড়ের রুপসী কন্যা কক্সবাজার শুধু রুপের দিকে নয় গুনের দিক থেকেও পিছিয়ে নেই। ক্রীড়াঙ্গনও অবহেলার ক্ষেত্র হয়নি কোনদিন। বরং খেলাধুলায় কক্সবাজার এক বিশেষ সম্মানের অধিকারী।
বিশেষ করে ফুটবল খেলায় কক্সবাজারের একটা গৌরবদ্বীপ্ত ইতিহাস আছে--- “কক্সবাজার টাউন ফিল্ড” সেই ইতিহাসের সুতিকাগার। সেই টাউন ফিল্ড ছিল ফুটবল খেলার কেন্দ্রবিন্দু। এর অবস্থান ছিল বিমান বন্দরে। অনেক খ্যাতনামা  খেলোওয়াড়দের পদচারণায় মাঠটি নিত্য সরগম থাকতো। আবার অনেকের ফুটবল খেলার হাতে খড়ি হয় এই মাঠেই। কলিকাতার অপরাজিত ইস্টবেঙ্গল দলের কৃতি খেলোয়াড় গদা (রশিদুজ্জমান) অমিত, চুন্নু বাবু, ও কুদ্দুছ এই মাঠের অন্যতম আকর্ষণ ছিল।
১৯৩৩ সালে কক্সবাজারে প্রথম একটি ফুটবল দল গঠিত হয়। তার নাম কক্সবাজার টাউন ক্লাব। এই দলের দর্শক নন্দিত খেলোয়াড় ছিলেন পান্না বাবু। বেনী  মাধব সেন, তেজেন্দ্র বড়ুয়া, রায় বাহাদুর শরৎচন্দ্র পাল, প্রবোদ কুমার রক্ষিত।বিপিন বিহারী রক্ষিত, বিভুতি সেন, মোহাম্মদ আলী উকিল, মনিন্দ্রলাল চৌধুরী, ইছমাইল , পল্টু বাবু, খুকু বাবু ও সিরাজ মিঞা প্রমুখ। পরবর্তীতে এই দলে যোগদান করেন টেকপাড়ার রফিক আহমদও হারবাং  এর এহতেশামুদ্দিন চৌধুরী।

কক্সবাজার টাউন ফিল্ডকে কেন্দ্র করে ক্রীড়াঙ্গনে যে অভুতপূর্ব প্রাণ চাঞ্চল্য সৃস্টি হয়েছিল সেই মাঠটি কিন্তু কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। তবে তার কিছু স্মৃতি এখনো প্রবীনদের হৃদয়ে অম্লান।
খেলার জগতের একজন বিশিস্ট ব্যক্তিত্ব  মোহাম্মদ আলী উকিল ছাত্রাবস্থায় চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ ও কলিকাতা ইডেন কলেজের ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন। তাঁরই উদ্যোগে টেকপাড়া বয়েজ ক্লাব নামে আর একটি ফুটবল দল গঠিত হয়। অবশ্য ওই দলটি ছিল তাঁর পারিবারিক ফুটবল দল।
১৯৩৯ সালে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় খেলাধুলা নিস্প্রভ হয়ে উঠে। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত খেলা ধুলায় তেমন তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়নি।
কক্সবাজার মহকুমা প্রশাসক বি এ এস ছলিম উল্লাহ ও বনবিভাগের কর্মকর্তা কিউ এম গাউসের প্রচেস্টায় আবার খেলাধুলা শুরু হয়। অন্যদিকে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ও কলিকাতা মোহামেডান স্পোর্টিং দলের কৃতি ফুটবলার এম এ রশিদ (ছোট রশিদ) এর উৎসাহে ঝিমিয়ে পড়া ক্রীড়াঙ্গন স্পন্দনময় হয়ে উঠে। তখন স্বর্গীয় মনিন্দ্রলাল চৌধুরীর বদান্যতায় আয়োজিত হয় “এ, কে, ঘোষ রানিং শীল্ড টুর্নামেন্ট” প্রতিযোগীতা। এই সব প্রতিযোগীতায় হারবাং এর আবদুল হামিদ খান, এহতেশামুদ্দিন চৌধুরী, টেকনাফের জালাল আহমেদ, উখিয়ার সৈয়দ নুর, টেকপাড়ার রফিক, রামুর ফারুক (লালু) অমিয় বড়ুয়া এবং এস, ডি ও একাদশের ভুপতি বড়ুয়ার ক্রীড়া নৈপুন্যতা দর্শকদের বিমুগ্ধ করে।
১৯৫৫৬-৫৭ সালে কক্সবাজার স্টেডিয়াম নির্মিত হয়। এর পিছনে যার অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করতে হয় তিনি হচ্ছেন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এ,কে এম জাকারিয়া, তাছাড়া স্থানীয় বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ও সংঘটক স্বর্গীয় মনিন্দ্রলাল চৌধুরী ও বিভুতি সেনের শ্রম ও সহযোগিতা প্রশংসার দাবী রাখে। এদের সম্মিলিত উদ্যোগে জনসাধারণ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। পরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান স্টেডিয়াম নির্মানে সাহায্য স্বরুপ ২৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন।
স্টেডিয়াম নির্মানের পর যথানিয়মে খেলাধুলা আরম্ভ করা হয় এবং কক্সবাজার মহকুমা ক্রীড়া সমিতি গঠিত হয়। মরহুম ফরিদ আহাম্মদ ছিলেন তার প্রথম সাধারন সম্পাদক। বদিউল আলম মাস্টার ছিলেন তাঁর অন্যতম সহযোগী। মহকুমা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকারিয়া ও মরহুম ফরিদ আহমদের পৃষ্ঠপোষকতায় ও উৎসাহে বিভিন্ন  স্কুলে খেলার মাঠ তৈরী করে খেলা ধুলার আয়োজন করা হয়।
এই ব্যাপারে বিভিন্ন এলাকার ক্রীড়াবিদগণ অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন এবং তাঁদের উদ্যোগে থানা কেন্দ্রিক ফুটবল খেলার তৎপরতা শুরু হয়।তাঁদের মধ্যে উখিয়ার সিরাজ মিয়া, মহেশখালীর আলী হোসেন, চকরিয়ার নুরুল কবির চৌধুরী, শাহার বিলের নুর মোহাম্মদ ও এলাহাবাদ চৌধুরী।
পেকুয়ার কবির আহাম্মদ চৌধুরী, রামুর দীনেশ বড়ুয়া, ক্ষেমেশ বড়ুয়া, ওবাইদুল হক, জাকের আহাম্মদ চৌধুরী, জ্ঞানেন্দ্র বড়ুয়া ও মোস্তাক আহমেদ এবং হারবাং এর এহতেশামুদ্দিনের নাম স্মরণ করতে হয়। স্বর্গীয় যামিনী বাবু প্রধান শিক্ষক থাকাকালে কক্সবাজার হাই স্কুলে খেলাধুলার আয়োজন উদ্যোগ গ্রহন করেন। হাই স্কুলের ফুটবল দল একটি শক্তিশালী দল হিসেবে সুনাম অর্জন করে।
মরহুম ফরিদ আহাম্মদ পুর্ব পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর কক্সবাজারের খেলাধুলার মানোন্নয়নে তিনি যে ভুমিকা পালন করেন তা অত্যান্ত প্রশংসাযোগ্য। তিনি ঢাকা থেকে কোচ পাঠিয়ে কক্সবাজারের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেন। তাঁরই উদ্যোগে আয়োজিত হয় পাকিস্তান বিমান বাহিনী বনাম পাক মোগল দলের মধ্যে প্রদর্শনী খেলা। পাকিস্তানের অপ্রতিদন্দ্বি দল করাচীর কেয়ামারি ও কক্সবাজার একাদশের প্রীতিফুটবল প্রতিযোগীতা। খেলায় কক্সবাজার একাদশ কেয়ামারী দলকে ১-০ গোলে হারিয়ে গৌরবের শীরোপা অর্জন করে। এর পর কক্সবাজার একাদশ চট্টগ্রামে কোহিনুর শীল্ড টুর্নামেন্ট ও আন্তজীলা ফুটবল প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করে  এবং কক্সবাজারের সুনাম অক্ষুন্ন রাখে।
কক্সবাজার একাদশের উদীয়মান খেলোয়াড় ছিলেন সুরত আলম, (আলম) একরামুল হুদা চৌধুরী, নুরুল হক, মোস্তাক আহাম্মদ, আবদুল হাকিম, ছৈয়দ নুর, গোলাল, নুরুল আজীম চৌধুরী, আবদুল্লাহ, নজির আহাম্মদ, পরিমল পাল, ছৈয়দনুর আবদুল রহমান, ক্ষেমেশ বড়ুয়া ও অমল বড়ুয়া।
১৯৫৮ সালে কক্সবাজার একাদশ আগাঁ খান গোল্ডকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেন এবং আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।
কক্সবাজার ক্রীড়া সমিতির কর্মকর্তা হিসাবে পর পর দায়িত্ব পালন করেন এডভোকেট ফিরোজ 
আহাম্মদ চৌধুরী, এডভোকেট আবু আহাম্মদ ও অধ্যক্ষ সআম শামশুল হুদা চৌধুরী। এডভোকেট মোহাম্মদ আলী উকিল, বিভুতি সেন দীর্ঘদিন রেফারী দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তীতে নজীর আহাম্মদ ও আবদুল্লাহ কন্ট্রাকটার  কক্সবাজার ক্রীড়া সমিতির সাধারন সম্পাদক হিসাবে দীর্ঘদিন খেলা ধুলা পরিচালনা করেন।
পরে জনাব বদিউল আলম মাস্টার , নুরুল হুদা চৌধুরী পর পর কক্সবাজার জেলার মহকুমা ক্রীড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে খেলাধুলার মানোউন্নয়নে সচেস্ট ছিলেন।তখন একমাত্র প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত রেফারী ছিলেন বদিউল আলম মাস্টার ও নুরুল হুদা চৌধুরী।তাঁরা সুষ্ঠু খেলা পরিচালনায় প্রশংসনীয় ভুমিকা রাখেন। এই সময়ে খেলোয়াড় হিসেবে সুনাম অর্জন করে ঝুলন পাল, কাসেম, জালাল, জামাল, সুনীল দে , শাহবুদ্দিন, সুরত আলম(গোল কীপার) শফিকুর রহমান চৌধুরী ।
কালির ছড়ার জমিদার হাফেজ আহাম্মদ চৌধুরী কক্সবাজার ক্রীড়া সমিতিকে একটি গোল্ডকাপ প্রদান করেন। গোল্ডকাপ প্রতিযোগীতার পর পর দু বছর অনুস্ঠিত হয়। স্বাধীনতার পর কক্সবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান এ,কে এম মোজাম্মেদ হক কক্সবাজার মহকুমা ক্রীড়া সংস্থাকে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ দান করেন। এর খেলা ৭৩-৭৪ সালে অনুষ্টিত হয়। উক্ত গোল্ডকাপ খেলা প্রতিযোগীতায় দেশের খ্যাতনামা ক্লাবগুলি অংশ গ্রহন করেন। পরে ২ টি গোল্ড কাপই তাঁরা ফেরত নিয়ে যান। ফলে গোল্ডকাপের খেলা আর অনুষ্ঠিত হয়নি।
এই সময়ে ইদগাঁও হাই স্কুল মাঠে ও ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্টিত হয়। ইদগাঁও মাঠকে মহকুমার ২য় স্টেডিয়াম হিসাবে রুপান্তরিত করা হয়। এ ব্যাপারে ইদগাঁও হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মরহুম সুলতানুল আলম চৌধুরী, নুরুল আজীম চৌধুরীর অবদান প্রশংসনীয়।
স্বাধীনতার পুর্বে তৎকালীন বনবিভাগীয় কর্মকর্তা আবদুল আলিম ফরেস্ট্ ক্লাব গঠন করেন। একই সময়ে সড়ক ও জনপথ ক্লাব, ওয়াপদা ক্লাব ও ই পি এফ ডি সি রিক্রিয়েশান ক্লাব গঠন হলে খেলাধুলার সঞ্চারিত হয় এক অভুতপুর্ব প্রানচাঞ্চল্য। এসব ক্লাব বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশ নিতেন। এই সময় অনুষ্ঠিত  হয় ঢাকার মোহামেডান স্পোটিং বনাম ভিক্টোরিয়া ক্লাবের মধ্যে ফাইনাল খেলা। উক্ত খেলা দর্শকদের বিপুলভাবে আলোড়িত করে।
১৯৮১ সালে বদিউল আলম মাস্টার কক্সবাজার মহকুমা ক্রীড়া সংস্তার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। এখানে কাবাড়ি, ভলিবল, সাঁতার, বেডমিন্টন ও লং টেনিস প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই স্টেডিয়ামে প্রদর্শনী মহিলা হ্যান্ডবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় মহিলা হান্ডবল দল অংশ গ্রহন করে।
আর্থিক দৈনতার কারণে বাহারছড়া তরুণ মুসলিম টেকপাড়া বয়েজ ক্লাব , যুব সংঘ অফিস একাদশ, পৌর সভা একাদশ, সি এন্ড বি ক্লাব, ফরেস্ট ক্লাব, ইগল স্পোর্টিং ক্নাব ও টাউন ক্লাব বিলুপ্ত হয়ে যায়।
১৯৮২-৮৩ সালে জনাব ফসির উদ্দিনকে ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। খেলাধুলার আয়োজন হলেও আশানুরুপ সাড়া জাগাতে সক্ষম হননি।
কক্সবাজার জেলায় উন্নীত হওয়ার পর জেলা প্রশাসক হিসেবে খন্দকার ফজলুর রহমান দায়িত্বভার গ্রহন করেন। তাঁর প্রশংসনীয় প্রচেস্টায় ক্রীড়াঙ্গনে ফিরে আসে নব উদ্দীপনা, মরা গাঙ্গে যেন জোয়ার লেগেছে। কক্সবাজার মহকুমা ক্রীড়া সংস্থাতে তিনি নতুন করে গঠন করে এডভোকেট শাহাবুদ্দিনকে সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পন  করেন। শুধু তা নয় তিনি বিভিন্ন উপজেলা ফুটবল দল গঠনে বিশেষ ভুমিকা পালন করেন। তিনি প্রতিটি উপজেলা দলকে পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। ইতিমধ্যেই কক্সবাজার শহরে দুটি শক্তিশালী ফুটবল দল গঠিত হয়। নজরুল ইসলাম চৌধুরীর পৃষ্টপোষকতায় আবাহনী ক্রীড়াচক্র ও কক্সবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, মনজুরুল হক ও এডভোকেট ইউছুপ মোহাম্মদ শামশুল হুদা চৌধুরী ও অন্যান্য নবীন খেলওয়াড়গন সম্মিলিতভাবে ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন দল গঠন করেন। উভয় দলের খেলোয়াড়গনকে প্রশিক্ষন দান করা হয়। নবীন খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে গঠিত উক্ত দল দুইটি অল্পদিনের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়। একতা ক্লাব, সৈকত যুব গোস্ঠি, আজাদ ইয়ং স্টার, ডুলহাজারা ক্রীড়া সংঘ, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ, উখিয়া রাইজিং ক্লাবও মহেশখালী উপজেলা ক্রীড়া সমিতির আবির্ভাব ঘটে।উক্ত দলগুলো ঐ বছর লীগ খেলায় অংশ গ্রহন করে। জেলা প্রশাসকের সক্রিয় সহযোগীতায় আয়োজিত হয় শেরে বাংলা ফুটবল টুর্নামেন্টের কর্ণফুলি জোনের খেলা। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের সাতটি জেলা দল অংশ গ্রহন করেন এবং ফেনী একাদশ চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করে। আর কক্সবাজার একাদশ রানার্স আপ হয়।বর্তমানে ক্রীড়া নৈপুন্যতায় যারা জনপ্রিয়তা অর্জৃন করে তারা হচ্ছে মোহাম্মদ আলী, খুরশীদ, রফিক মঈন, টাইটেল, প্রশান্ত, অমলেন্দু, হাবিব, জসিম, আবসার, কাঞ্চন, নিকাশ ও রুহুল কাদের।
স্মরন রাখা প্রয়োজন যে উপ আঞ্চলিক সামরিক আইন প্রশাসক মেজর আবুল ফরিদ ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ফজলুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় টেনিস কোর্টটির সংস্কার সাধিত হয়।
১৯৪৮ সালে মার্চ মাসে লন টেনিস প্রতিযোগিতা ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার সাতটি ও উপজেলা থেকে বিপুল সংখ্যক প্রতিযোগী অংশ গ্রহন করে। আলম ফরাজীর নের্তৃত্বে ১৫দিন ব্যাপী ভলিবল কোচিং এর ব্যবস্থা করা হয়। একই সালে মে মাসে ঐতিহ্যবাহী জেলা প্রশাসকের বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ফিফা ব্যাজধারী  মনির হোসেন, ও  জেড আলম এবং বাংলাদেশ রেফারী এসোসিয়েসনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল রহমানের নের্তৃত্বে ২১ দিন ব্যাপী রেফারী প্রশিক্ষনের কোর্সের আয়োজন করা হয়। এতে সাতটি উপজেলার ৩০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহন করে।
কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থা কর্তৃক এই বছর কিছু উন্নয়মুলক কাজ সম্পন্ন করা হয়। এর মধ্যে  লালদিঘীতে এক লাখ বিশ হাজার টাকা ব্যয়ে সুইমিং ট্যাংক নির্মান,ফুটবল মাঠ উন্নয়ন, গ্যালারি ও প্যাভিলিয়ন মেরামত ও প্লেয়ার্স হোস্টেল  বিদ্যুতায়ন ও সংস্কার ইত্যাদী।
আরো গৌরবের বিষয় যে, কক্সবাজারের কয়েকজন কৃতি ফুটবলার স্বাধীনতার আগে ও পরে  ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন দলের পক্ষে নিয়মিত খেলতেন। ইপিয়ার দলের ছগির, ভিক্টোরিয়া ক্লাবে জালাল, ঝুলন ও আলম, ওয়াপদা দলে সুনীল  মোহেমেডান স্পোটিং দলে মোস্তাক, চট্টগ্রামের বিভিন্ন দলে হাবিবুল্লাহ, ইসমাইল, মনসুর, খোকা বড়ুয়া, মকবুল ও অমলেন্দু কৃতিত্বের সাথে খেলেছেন। তম্মদ্যে মোস্তাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভারত সফর করেন এবং সুনীল জাতয়ি দলের পক্ষে মারদেকায় ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেন। সুনীল ভারতে অনুষ্ঠিত কোচ প্রশিক্ষন কোর্সে অংশ গ্রহন করেন। 
তাই এইসব প্রথিতযশা খেলোয়াড়দের গৌরব ও মহিমায় কক্সবাজার ক্রীড়াঙ্গন বাংলাদেশের মধ্যে এক বিশেষ সম্মানের আসনে সমাসীন।আগামী দিন ও কক্সবাজার ক্রীড়াঙ্গন এই ধরনের খ্যাতিমান খেলোয়াড়দের জন্ম দিতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। তবে তা নির্ভর করবে স্থানীয় ক্রীড়াবীদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের আন্তরিক ইচ্ছা ও আগ্রহের উপর।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কলাম

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.