১ মে ২০২৪ইং ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ : অগ্নিযুগের বিপ্লবী পুরুষ দেশবরেণ্য কৃতী সন্তান সুরেশ চন্দ্র সেন

১ মে ২০২৪ইং ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ : অগ্নিযুগের বিপ্লবী পুরুষ দেশবরেণ্য কৃতী সন্তান সুরেশ চন্দ্র সেন
অধ্যক্ষ মোশতাক আহমদ :

১মে ২০২৪ অগ্নিযুগের বিপ্লবী পুরুষ উপমহাদেশের কৃতী সন্তান এডভোকেট সুরেশ চন্দ্র সেনের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের ১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে কক্সবাজারে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সময়-ইতিহাসের দীপাধার এডভোকেট সুরেশ চন্দ্র সেন এই দিনে তাঁর সুদীর্ঘ জীবনের ইতি টেনে রেখে গেছেন মানব মুক্তির সংগ্রামের অনন্য অধ্যায়। উপমহাদেশের মৃত্যুঞ্জয়ী এই বীরপুরুষের জীবনাবসানের সাথে সাথে থমকে যায় এক অসাধারণ ইতিহাস। যার সাথে জড়িয়ে আছে দুই দু’টি স্বাধীনতা সংগ্রাম আন্দোলন এবং রাষ্ট্রজন্মের জন্মযন্ত্রণা এবং জাতীয় মুক্তির মহান অনুপ্রেরণা।
উপমহাদেশের রাজনীতি, বিপ্লবী চেতনা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মানবিক ধারায় অনন্য একনাম এডভোকেট সুরেশ চন্দ্র সেন। স্বদেশ, স্বাধীনতা, মাটি ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতার জন্য অসীম ত্যাগ সংগ্রামী জীবন এ মানুষটিকে দেশের ইতিহাসে সবসময় মহীয়ান করে রেখেছে। জন্ম থেকেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মেধা প্রজ্ঞা সততায় আদর্শে এখনো কিংবদন্তী পুরুষ হিসেবে সবার মাঝে বেঁচে আছেন অগ্নিযুগের এই বিপ্লবী পুরুষ। পরাজয়ের শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতার রক্ত সূর্য ছিনিয়ে আনতে সুরেশ চন্দ্র সেন দু-দু’বার সাহসী স্বাধীনতা সংগ্রামীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। একবার বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে অবিভক্ত ভারতকে স্বাধীন করার জন্য ১৯৩০-৩১ সালের চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের রক্তঝরা দিনে, আরেকবার বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য কালজয়ী ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে। একই সাথে শৈশব থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত শিক্ষা-সংস্কৃতি, সমাজকর্মসহ যেকোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে সবসময় সামনের কাতারের মানুষ ছিলেন এই মহান বিপ্লবী।
একজন বিপ্লবী হিসেবে সুরেশ চন্দ্র সেনের জীবনের প্রতিটি সিঁড়ি, অধ্যায় তাৎপর্যপূর্ণ এবং শিক্ষণীয়। সুরেশ চন্দ্র সেন যে একদিন সন্দীপন সাহসী মানুষ হিসেবে পরিচিতি হবেন, তার পরিচয় তিনি ছোটবেলা থেকেই দিয়েছিলেন। পিতা ঈশ্বর চন্দ্র সেন মাতা বামাদেবী সেনের গর্ভে ১৯০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলার সারোয়াতলী গ্রামে সুরেশ চন্দ্র সেনের জন্ম। ঘরের একমাত্র সন্তান হিসেবে তার যে ধরনের উষ্ণ স্নেহের অধ্যায় শুরু করার কথা ছিল সে আড়ম্বরতা তার জীবনে খুব একটা ঘটেনি। পিতার অঢেল বিত্তবৈভব থাকলেও ঈশ্বর চন্দ্র সেন সুরেশ সেনকে গ্রামের সাধারণ মানুষের ছেলের মতো বড় করেন। জ্ঞান-প্রজ্ঞা মানবতা কল্যাণবোধের নীতি নৈতিকতা নিয়ে তার জীবন শুরু হয়েছিল। অসাধারণ মেধার কারণে তিনি শৈশব থেকে গ্রামের স্কুলের সবার চোখে পড়ে ছিলেন। পিতা-মাতা চাইতেন সুরেশ চন্দ্র সেন যেন বিদ্ব্যান এবং কৃতী মানুষ হিসেবে বড় হয়ে বংশের মুখ উজ্জ্বল হয়। যার জন্য শৈশব থেকেই তাঁর জীবনটা অন্যভাবে শুরু হয়। সে কাকডাকা ভোরে উঠে ধর্মীয় বন্দনা, শরীর চর্চাসহ পাঠাভ্যাস করা ছিল তাঁর নিত্যদিনের কাজ। তারপর স্কুলে যাওয়া এবং ফিরে আসাও ছিল নিয়ম মতো। বিদ্যালয়ের গরিব সহপাঠীদের সাথে বিশেষভাবে তিনি মিশতেন। তাদের দুঃখ-কষ্ট অনুভব করে নিজেরসহ বাবা মা থেকে বই কলম খাতাসহ কাপড়চোপড় দিয়ে তাদের সহযোগিতা করতেন। নিজের পাঠানো খাবার সবার মাঝে ভাগ করে খেতেন। গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে মিশে তাদের সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনার সাথে নিজের জীবনকে মিশিয়ে ছিলেন। একজন মানবিক মানুষ হিসেবে তার জীবনকালের উপর সবসময় প্রভাব পড়েছে।

স্কুল জীবনের শেষদিকে এবং কলেজে পড়ার প্রথমলগ্ন থেকে মাস্টারদা সূর্যসেনসহ বিভিন্ন কৃতী মানুষের সংস্পর্শে তাঁর জীবনের নতুন দুয়ার খুলে যায়। লেখাপড়ার সাথে সাথে মুক্তবুদ্ধির জ্ঞানচর্চা এবং মানবিক মূল্যবোধকে নিজের জীবনের আদর্শ হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। ঐ সময় মাস্টারদা সূর্যসেনের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে স্বদেশী আন্দোলনের সাথে তিনি যুক্ত হন। গ্রামে গ্রামে তরুণদের সংগঠিত করে স্বাধীন জন্মভূমির স্বপ্ন দেখার কাজ তাঁরা শুরু করেন। যেটা এখনো যেকোন দেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তির মন্ত্র হিসেবে মানুষকে সবসময় অনুপ্রেরণা যোগায়।
প্রায় ২৫ বছর বয়সে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল বৃটিশ বিরোধী ঐতিহাসিক জালালাবাদ যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ইংরেজদের সাথে যুদ্ধকালীন সময়ে চট্টগ্রামের যুব বিদ্রোহীরা বৃটিশদের হাত থেকে বীর চট্টলাকে ৪ দিন মুক্ত এবং স্বাধীন করে রাখে। যুদ্ধের এক পর্যায়ে বিপ্লবী সুরেশ চন্দ্র সেনসহ একদল যুব বিদ্রোহী চট্টগ্রামে বৃটিশ পতাকা (ইউনিয়ন জ্যাক) নামিয়ে সর্বভারতীয় স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। সশস্ত্র যুদ্ধকে আরো বৃহত্তর পর্যায়ে সংগঠিত করার সময় ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে তিনি ব্রটিশ সেনাদের হাতে বন্দি হন। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রহসনমূলক বিচারে ১৯৩১ সাল থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য সুরেশ চন্দ্র সেন একটানা দীর্ঘ দশ বছর কারাভোগ করেন। আলীপুর জেল, বকসাদুয়ারা ক্যাম্প, বহরমপুর জেলসহ ভারতের বিভিন্ন কারাগারে তাঁর কারাজীবন কাটে। জেলে থাকা অবস্থায় রেকর্ড পরিমাণ মার্কস নিয়ে তিনি প্রথম শ্রেণীতে বি.এ এবং ল (আইন) পাশ করেন। জেল থেকে বের হয়ে এসে তিনি আইন পেশা এবং রাজনীতির সাথে ভালোভাবেই সংযুক্ত হন।
১৯৪৭ এর দেশভাগের সময় সুরেশ চন্দ্র সেনের ত্যাগ এবং অসাধারণ মেধার কারণে তৎকালীন ভারতের কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকরা তাঁকে ভারতে এসে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নিতে অনুরোধ জানান। কিন্তু বাংলাদেশের মাটির টানে সুরেশ চন্দ্র সেন ভারতে যেতে এবং দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন। ’৪৭ এর দেশভাগের পর তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে থেকে যান। মূলত ১৯৪৫ সাল থেকে সুরেশ চন্দ্র সেনের শুরু হয়েছিলো কক্সবাজারে স্থায়ীভাবে বসবাস। কক্সবাজারে বসবাস করলেও তিনি জাতীয় পর্যায়ে কৃষক-শ্রমিকদের অধিকারসহ নানান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সবসময় সম্পৃক্ত ছিলেন। সুরেশ চন্দ্র সেন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে কক্সবাজারসহ জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন।
’৫২ সাল থেকে বাঙালি জাতির প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নিয়ে সাধারণ গরীব মানুষের রাজনীতি এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যান। বিশেষ করে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬ দফাসহ বিভিন্ন শ্রমিক আন্দোলন, ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানসহ আয়ুব বিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন অন্যতম নেতৃত্বদানকারী লড়াকু সৈনিক। ১৯৭০ এর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে সারা বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা যখন বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল তখন তিনি মৌলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্যদের সাথে অমানুষিক পরিশ্রম করে নিজেকে ত্রাণ কার্যে নিবেদিত করেছিলেন। একই বছর জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। তখনকার আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল নেতৃবৃন্দ তাঁর সাথে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন নির্দেশনাবলী এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিতেন। যার জন্য তাঁর বাসভবন ছিল প্রগতিশীলদের জন্য বিশেষ স্থান এবং পরামর্শ কেন্দ্র। যেটার স্মৃতি এখনো সবার মনে জাগরুক হয়ে আছে এবং থাকবে।
’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে জেলা এবং জাতীয় পর্যায়ে তিনি কৃতী সংগঠক হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথমলগ্ন থেকেই তিনি কক্সবাজারে সর্বদলীয় ভিত্তিক জেলা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা পরিষদের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। বিশেষ করে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে তৎকালীন প্রগতিশীল জাতীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তাঁর সাথে যোগাযোগ রাখতেন এবং মুক্তিযুদ্ধকে কিভাবে এগিয়ে নেয়া যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিতেন। মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে তাঁকে বিভিন্নভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী গ্রেফতার করার অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু অসীম সাহসী সুরেশ চন্দ্র সেন সুকৌশলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এবং গ্রামাঞ্চলে থেকে মুক্তিযুদ্ধের দীপ্ত মশালকে প্রজ্জ্বলিত রেখেছিলেন। দীর্ঘ ন’মাস দেশের অভ্যন্তরে থেকে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর সাথে যোগাযোগ রাখতো এবং তিনি তাদের সর্বোতভাবে সহায়তা প্রদান করতেন। এর জন্য ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী দুবার সুরেশ চন্দ্র সেনের বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হলে তিনি কক্সবাজার চলে আসেন এবং যথারীতি গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাজনীতি এবং আইন পেশার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর হুলিয়া নির্যাতনসহ নানান দমন-পীড়ন তিনি এবং তাঁর পরিবারের উপর নেমে আসে। রুদ্ধশ্বাস কঠোর সামরিক শাসনের মধ্যে তিনি মাথা নত করেননি। মুক্তিযুদ্ধের শাণিত চেতনায় সামরিক শাসন বিরোধী লড়াইসহ নানান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিপ্লবী সুরেশ সেন অংশগ্রহণ করেন।
এডভোকেট সুরেশ চন্দ্র সেন আইনজীবী হিসেবেও প্রভূত সুনাম অর্জন করেন। তাঁর সৎ আইনী পেশা এখনো সবার জন্য নীতিমূলক ধারা হিসেবে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে আছে। তিনি অর্থের চাইতে মানবিক সহমর্মিতায় চিরদিন মানবসেবা করে গেছেন। যেটা এখনো কিংবদন্তী হয়ে মানুষের মুখে মুখে এবং হৃদয়ে বেঁচে আছে। সুরেশ চন্দ্র সেন তাঁর সারাজীবনের রাজনীতিতে কোনদিন আপোষ করেননি। নীতি আদর্শকে সামনে রেখে তিনি সবসময় রাজনীতি করতেন। সামাজিক সাংস্কৃতিক এবং পেশাগত জীবনে তিনি অতুলনীয় সততা এবং সাহস দেখিয়ে দেশবাসীর ভালোবাসা অর্জন করেন। কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নানান কৃতি-প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল দেখার মতো। রাজনীতির বাইরে দেশের শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত থেকে প্রগতিশীল চিন্তার আলোর ধারাকে সবার মধ্যে ছড়িয়েছেন। যেটা এখনো সবার মধ্যে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্য মন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়, কমরেড মোজাফফর আহমদ, মজলুম জননেতা মৌলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কমরেড মণি সিংহ, তাজউদ্দিন আহমদ, কমরেড জ্যোতিবসু, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, মৌলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশসহ দেশে-বিদেশে কৃতী রাজনীতিবিদদের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঙ্গনের কৃতী মানুষেরা সুরেশ চন্দ্র সেনকে ভালোবাসতো এবং কক্সবাজারের দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ তাঁকে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা করতো। তাঁর সুযোগ্য স্ত্রী অর্চনা সেন ৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ পরলোক গমন করেন। দুই পুত্র কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কমিশনার প্রয়াত সত্যজিত সেন, সাংবাদিক গবেষক, লেখক বিশ্বজিত সেন, দুই কন্যা শিক্ষিকা দেবী সেন ও গোপা সেন পরিবার পরিজন নিয়ে কক্সবাজারের স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। ’৮১ সালের ১মে থেকে সকল মানুষের ভালোবাসা নিয়ে কক্সবাজারের মাটিতে অগ্নিযুগের বিপ্লবী পুরুষ সুরেশ চন্দ্র সেন স্বগৌরবে শুয়ে আছেন।
অগ্নিযুগের বিপ্লবী পুরুষ এডভোকেট সুরেশ চন্দ্র সেন নীতি আদর্শের এক মহান মানুষ। বিপ্লবী দেশপ্রেমের সারাজীবন পরীক্ষা দিয়ে লোকান্তরিত হয়েছেন ১৯৮১ সালের ১মে। অনেক বছর গড়িয়ে গেলেও সুরেশ চন্দ্র সেন এখনো এক অবিনশ্বর মানুষ। দেশ মাতৃকা, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রগতির কথা যখনই আসবে, তখনই সেটার মাঝে ধ্বনিত হবে বিপ্লবী সুরেশ চন্দ্র সেনের নাম। আজন্ম বাঙালি, সংগ্রামী এবং কীর্তিমান মানুষ হিসেবে তিনি সবার মাঝে বেঁচে থাকবেন হাজার বছর ধরে!
লেখক : শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, গবেষক।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কলাম


পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.