১১ বছর বয়সী রোহিঙ্গা শিশু আবদুল ওয়াহেদ। কচি হাতের ছোঁয়ায় ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছেন ইটের ভাটা থেকে নির্গত ধোয়ায় বায়ু দূষণ, কলকারখানার বর্জ্যতে নদীর পানির দূষণসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অন্যদিকে ১৬ বছর বয়সী রোহিঙ্গা কিশোরী শাহিদা মনের মাধুরি মিশিয়ে রং-পেন্সিলের আঁচড়ে সাদা কাগজে একেছেন জলোচ্ছাস সৃষ্ট বন্যায় বুক সমান পানি পেরিয়ে গৃহহীনদের আশ্রয়কেন্দ্রে ছোটার দৃশ্য। ওদের দুজনের মতই উখিয়া ও টেকনাফে ক্যাম্পে বসবাসরত দুই শতাধিক রোহিঙ্গা শিশুদের হাতে উঠে এসেছে জলবায়ু পরিবর্তণের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দূর্যোগের প্রতিচ্ছবি। সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত 'আরটিভিসম বা জলবায়ু পরিবর্তনে শিশুদের ভাবনা’র অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা শিশুরা ছবিগুলো এঁকেছেন।
১৭ আগষ্ট দুপুরে কক্সবাজার শহরের ফিশারিঘাটের সেভ দ্য চিলড্রেন-এর জেলা কার্যালয়ে ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে বাছাইকৃত ৮২ টি ছবি নিয়ে একটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে আবদুল ওয়াহেদসহ শিশু গ্রুপে ৪ জন ও শাকিরাসহ কিশোর গ্রুপে ৩ জনকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়।
এ বিষয়ে সেভ দ্য চিলড্রেন-এর মিডিয়া কমিউনিকেশন ম্যানেজার ( কক্সবাজার) শহিদুল হক খান বলেন, ২ আগষ্ট থেকে ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত “ আরিটিভিসম বা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের ভাবনা’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে দুই গ্রুপে ২ শতাধিক শিশু অংশগ্রহন করে ।
তাদের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে ৬ থেকে ১১ বছসী ৩৭ জনের এবং ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৪৫ জনের আঁকা ছবি নিয়ে একটি প্রদর্শনী করা হয়। এতে দুই গ্রুপ থেকে ৭ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। বিজয়ীদের সনদ দেয়া হবে এবং তাদের এই চিত্রগুলো কপ ২৭ (বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন)-এ প্রদর্শন করা হবে। এছাড়াও, অংশগ্রহনকারী সকলেই পাবে ছবি আকার সকল সরঞ্জাম। ছোট ছোট রোহিঙ্গা শিশুদের আঁকা ছবি বিচারকাজে জড়িত ছিলেন ৪ জন ।
তারা হলেন, শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনের সহকারী কমিশনার আরিফ ফয়সাল খান, কক্সবাজার সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান শরমিন সিদ্দিকা লিমা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি কক্সবাজার জেলার চিত্রাংকন প্রশিক্ষক আবুল হাসনাত জিকু এবং সেভ দ্য চিলড্রেন কক্সবাজার জেলার শেল্টার কার্যক্রমের সিনিয়র ম্যানেজার আনিসুল ইসলাম।