দোকান কর্মচারী থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক ফারুক!

দোকান কর্মচারী থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক ফারুক!
টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়ার বাসিন্দা ওমর ফারুকের জীবনে ঘটে গেছে নাটকীয় উত্থান। এক সময় মোবাইল ফোনের দোকানের কর্মচারী ছিলেন; এখন তিনি পরিচিত ‘সিআইপি ফারুক’ নামে। বিগত এক দশকে বৈধ-অবৈধ পথে গড়ে তুলেছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ-যার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট অপরাধজগতের জটিল চিত্র।

২০০৮ সালে মামার দোকানে চাকরির মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন ফারুক। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে বিয়ে করেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বোন আয়েশা ছিদ্দিকীকে। এই বিয়েকেই স্থানীয়রা মনে করছেন তার উত্থানের ‘আলাদিনের প্রদীপ’। 
গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ফারুক বর্তমানে একটি হুন্ডি, ইয়াবা, স্বর্ণ ও মানবপাচার সিন্ডিকেট পরিচালনা করছেন। চট্টগ্রামভিত্তিক এই নেটওয়ার্কে তার ভাই এনামুল হাসানসহ রয়েছেন অন্তত ২০ জন সদস্য। এনামুল আগে বদির ক্যাশিয়ার ছিলেন, বর্তমানে বিএনপির ছায়ায় আছেন বলে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ফারুক নিয়মিত বদির সঙ্গে কারাগারে দেখা করে তার ব্যবসা পরিচালনা করছেন। টেকনাফে ফার্মেসি, দোকান ও অফিসের আড়ালে হুন্ডি ও চোরাচালান চালিয়ে যাচ্ছে এই চক্র।

আয়কর অফিস জানায়, ফারুক ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তার দুটি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে দিয়েছেন ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার কর। এর আগের দুই অর্থবছরেও ছিলেন সেরা করদাতা। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার প্রকৃত আয় ও সম্পদ আয়কর নথিতে উল্লেখিত পরিমাণের বহু গুণ বেশি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবহার করে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে মিয়ানমারে। এই পাচারে ফারুক ছিলেন বদির নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি। ফরেন ডিমান্ড ড্রাফট (এফডিডি)-এর মাধ্যমে এসব অর্থ বৈধ পথে প্রেরণের মতো করে পাচার করা হয়েছে।
এছাড়া বদির রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ফারুক টেকনাফে বহু জমি ও মার্কেট জোরপূর্বক দখল করেছেন বলে অভিযোগ। 
পল্লান পাড়ার বাসিন্দা হারুন রশিদ জানিয়েছেন, তাদের সীমান্ত মার্কেটসহ জমি দখল করে নেয়া হয়, প্রতিবাদ করলে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হতে হতো। এ নিয়ে আদালতে মামলা করেছেন তিনি।
এসব বিষয়ে কথা বলতে ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি এবং ক্ষুদে বার্তারও জবাব দেননি।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার


পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম

© 2025 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.