আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর কারিগরি সহায়তায় এবং এনরুট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কর্তৃক বাস্তবায়িত ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (জিএসিসি)-এর অর্থায়নে পরিচালিত “কক্সবাজার জেলার নারী ও যুবকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ (আইসেক)” প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারে তিনদিনব্যাপী উদ্যোক্তা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণের ১১তম ব্যাচের কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
২৭ থেকে ২৯ মে ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত সার্কিট হাউস রোডে অবস্থিত ‘অরুণোদয়’ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণে হোটেল ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীসহ মোট ৩৬ জন অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ করেন।
“উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ” শীর্ষক এই কার্যক্রমে বিপণন কৌশল, আর্থিক পরিকল্পনা, গ্রাহক সেবার মানোন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক ধারণার বাস্তবায়ন বিষয়ক অংশগ্রহণমূলক সেশন পরিচালিত হয়।
অংশগ্রহণকারীরা দলভিত্তিক কাজ, চিত্রাঙ্কন, ভূমিকাভিত্তিক নাটিকা, পণ্যের বিশ্লেষণ এবং বাস্তব কেস স্টাডির মাধ্যমে কক্সবাজার এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. নবীদ আকবর, (ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার, আইএলও, কক্সবাজার)।
তিনি বলেন, “কক্সবাজারে এখনও অনেক সম্ভাবনা অপ্রকাশিত রয়ে গেছে। আমাদের উদ্যোক্তারা প্রশিক্ষিত ও ক্ষমতায়নপ্রাপ্ত হলে তারা শুধু নিজেদের নয়, পুরো সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন।” মো. ইব্রাহিম খলিল ভূঁইয়া, প্রকল্পের টিম লিডার, প্রশিক্ষণের কৌশলগত উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য শুধু জ্ঞান প্রদান নয়, আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা—যাতে অংশগ্রহণকারীরা তাদের ধারণাকে সফল ব্যবসায় রূপ দিতে পারে এবং স্থানীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. আবুল কাশেম, সভাপতি, হোটেল মালিক সমিতি এবং মো. মোহাম্মদ আলী, সভাপতি, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। তারা এই ধরণের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পর্যটন খাতের মানোন্নয়ন ও সার্বিক সেবা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ বলে মত দেন। মো. কাশেম বলেন, “হোটেল মালিক হিসেবে আমরা পর্যটকদের প্রথম অভিজ্ঞতা দেই। এই প্রশিক্ষণ আমাদেরকে শুধু পরিচালনার বাইরেও ব্যবসার বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি শেখায়, যা অর্থনৈতিক টেকসইতার সাথে জড়িত।” মো. আলী বলেন, “রেস্তোরাঁ কেবল খাবার সরবরাহ করে না, এটি একটি সংস্কৃতির অংশ। ব্র্যান্ডিং, বিপণন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঠিক জ্ঞান থাকলে আমরা আরও ভালো অভিজ্ঞতা দিতে পারি।” প্রশিক্ষণটি অংশগ্রহণকারীদের জ্ঞানের ঘাটতি পূরণ, উদ্ভাবনী ধারণার বিকাশ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সহায়ক হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা প্রশিক্ষণের বাস্তবমুখী ও অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন এবং ভবিষ্যতে আরও ঘন ঘন এই ধরনের প্রশিক্ষণের দাবি জানান। ISEC প্রকল্প “লিভ নো ওয়ান বিহাইন্ড” নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে কক্সবাজারের উদ্যোক্তাদের আধুনিক পর্যটন ব্যবসার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।