বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল। বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস। নেই কাঙ্খিত পর্যটক। যার কারণে এক প্রকার বন্ধ সৈকতপাড়ের ব্যবসা। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সৈকতপাড়ের ফটোগ্রাফার থেকে কিটকট, জেড স্কী, বিচ বাইক চালক ও ঘোড়াওয়ালারা।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বৈরী আবহাওয়ার পরও সৈকতের লাবনী পয়েন্টের বালিয়াড়িতে ঘোড়া নিয়ে এসেছেন রেজাউল করিম, নিহাল, বাবু ও আল আমিন। ৪ জনই চোখে মুখে হতাশা।
তারা বলেন, প্রতিদিন সকাল ৮ টায় সৈকতে ঘোড়া নিয়ে আসি। সারাদিন ঘোড়া পিঠে পর্যটকদের উঠিয়ে ছবি তোলা কিংবা চড়ায়। তার বিনিময়ে প্রতিদিন ১ হাজার টাকা কিংবা দেড় হাজারর টাকা আয় হয়। কিন্তু আজকে সকাল ৮ টায় এসেছি, কিছু পর্যটকও আছে। কিন্তু কেউ ঘোড়াতে চড়েনি বৈরী আবহাওয়ার কারণে। কোন আয় রোজগারও হয়নি। কিভাবে খালি হাতে ঘরে যাব বুঝতে পারছি না।
ঘোড়াওয়ালাদের পাশেই অবস্থান করছে বিচবাইক চালক। যার নাম নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, এক টাকাও আয় হয়নি আজকে। যেহেতু সাগরের উচ্চ জোয়ার। বালিয়াড়ির যেখানে বিচ বাইক চালানো হতো সেখানে পানি। এখন শূন্য হাতে বসে আছি।
সাগরের পাড়ে আর একটু হাঁটতেই দেখা হয় ঝাল মুড়ি বিক্রেতা মো. নজরুল ইসলাম ও মো. সবুজের সঙ্গে। তারা বলেন, সকালে সাড়ে ৮টায় ব্যবসা করতে এসেছি। এখন দুপুর সাড়ে ১২ টা বাজে। কিন্তু এখনো এক টাকার ঝাল মুড়িও বিক্রি করতে পারিনি।
সবার মতো একই অবস্থা জেড স্কী, ফটোগ্রাফার, চটপটি বিক্রেতা কিংবা শামুক-ঝিনুক বিক্রেতাদের।
লাবনী পয়েন্টের ফটোগ্রাফার মো. গফুর বলেন, দুপুর পর্যন্ত সৈকত পর্যটকদের ছবি তুলে ১ হাজার টাকা আয় হতো। সেখানে আজকে ছবি তোলা শুরুই করতে পারিনি। আমার মতো এই পয়েন্টে ৩০ জন ফটোগ্রাফারের একই অবস্থা।
সাগরের পানি থেকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে জেড স্কী। এই জেড স্কী চালক ফরমান বলেন, সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ। যার কারণে জেড স্কী উপকূলে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যবসা এক প্রকার বন্ধ।
কিটকট ব্যবসায়ী রানা বলেন, লাবনী থেকে সুগন্ধা ও শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত কয়েক'শ কিটকট বালুচর থেকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। এখন ব্যবসা বন্ধ করে নিরাপদে বসে আছি।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় বন্ধ রয়েছে শামুক-ঝিনুকের দোকানগুলো। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। যার কারণ দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে।
একই অবস্থা সৈকতপাড়ের চটপটি দোকানদারদেরও। আনন্দ চটপটির পরিচালক হৃদয় বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে দোকান বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কারণ বালু উড়ছে, যা কারণে দোকান খোলা যাচ্ছে না।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে সহস্রাধিক দোকানপাট রয়েছে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া কারণে এক প্রকার বন্ধ রয়েছে সব ব্যবসা।