সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর নির্বাচনে ভোট গ্রহণের উপর প্রদত্ত অস্থায়ী স্থগিতাদেশ আদালত স্থগিত করে দিয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি মোঃ রেজাউল হক রোববার (১৮ মে) এ আদেশ দেন। উচ্চ আদালতের এ আদেশের ফলে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর নির্বাচনে ভোট গ্রহণে আর কোন বাঁধা থাকলোনা।
সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে এ বিষয়ে আপীলকারীর পক্ষে সিভিল পিটিশন ফাইলকারী অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আইনজীবী মোঃ তৌফিক হোসাইন এ তথ্য জানিয়েছেন।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সকল প্রক্রিয়া যখন প্রায় সম্পন্ন, তখন নাছির উদ্দিন আল নোমান সহ ১০ জন নির্বাচনে তাদের ভোটার না করার অভিযোগ এনে ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ স্থগিত করার আবেদনে একই বছরের ২৬ নভেম্বর কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী জজ সুশান্ত প্রসাদ চাকমার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর অপর : ৩১৬/২০২৪ (সদর)। মামলায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান মুহম্মদ নুরুল ইসলাম, সদস্য মাহবুবুর রহমান ও এস.এম আমিনুল হক চৌধুরী, ইউনিয়নের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট জি.এ.এম আশেক উল্লাহ, আংশিক মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সরওয়ার ও শ্রম অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালককে বিবাদী করা হয়। এ মামলার বিবাদী ইউনিয়নের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট জি.এ.এম আশেক উল্লাহ ও আংশিক মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সরওয়ার বাদী পক্ষের আনীত দাবি সঠিক এবং তাদেরকে ভুল বশত ভোটার করা হয়নি মর্মে আদালতে বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দাখিল করেন। ফলে গত বছরের ২৮ নভেম্বর এ মামলায় শুনানী শেষে আদালত সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর নির্বাচনে ভোট গ্রহণের বিরুদ্ধে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারী করেন।
পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে ইউনিয়নের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য কক্সবাজারের জেলা জজ আদালতে মিচ আপীল মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর : ৮৩/২০২৪ ইংরেজি। এ মামলায় সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর সদস্য মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী পক্ষ ভুক্ত হয়ে একটি আবেদন করেন। বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জেলা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ গত ১৬ মার্চ আবেদনটির চতুর্পক্ষের দীর্ঘ শুনানী শেষে শ্রম আইন রেজিষ্ট্রেশন করা সংগঠনের সর্বপ্রকারের বিরোধ একমাত্র শ্রম আদালতেই বিচার্য। এ বিষয়ে অন্য কোন দেওয়ানী আদালতে শ্রম আইনে রেজিষ্ট্রেশন করা সংগঠনের বিরোধ বিচার করার কোন এখতিয়ার নেই। তাই নাছির উদ্দিন আল নোমান গং এর করা মামলাটির মূল আর্জি রিজেক্ট করে দেন এবং বিগত সালের ২৮ নভেম্বর সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর নির্বাচনের উপর সিনিয়র সহকারী জজ প্রদত্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর ঘোষণা করেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ এর ১৬ মার্চ প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে নাসির উদ্দিন আল নোমান গং হাইকোর্টের বিচারপতি আতাবুল্লাহ'র অবকাশকালীন বেঞ্চে আপীল করলে গত ২৫ মার্চ হাইকোর্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ এর প্রদত্ত আদেশ স্থগিত করে দেন। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর সদস্য মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের চেম্বার জজ এর আদালতে আপীল করেন। যার সিভিল পিটিশন নম্বর : ১৭৪৮/২০২৫ ইংরেজি। রোববার (১৮ মে) আপীল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি মোঃ রেজাউল হক এর কোর্ট উক্ত সিভিল পিটিশনটি উভয় পক্ষের শুনানী শেষে গত ২৫ মার্চ হাইকোর্টের প্রদত্ত আদেশ স্থগিত করে দেন। ফলে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর স্থগিত থাকা ভোট গ্রহণে আর কোন বাঁধা নেই। আপীল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে মামলাটির শুনানী করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল। তাঁকে সহায়তা অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দীন।
সুপ্রীম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতের এ আদেশের পর সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর সাবেক সহ সভাপতি ও বর্তমানে সহ সভাপতি পদপ্রার্থী এম. আর মাহবুব তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, আদালতের আদেশের ফলে ইউনিয়নের নির্বাচনী কার্যক্রমের উপর সকল বাঁধা দূর হওয়ায় তাঁরা এখন দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করতে নির্বাচনী কমিটিকে আবেদন করেছেন। সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছৈয়দ আলম উচ্চ আদালতের আদেশের পর সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের নির্বাচনী কমিটি দ্রুত একটি স্বচ্ছ, গ্রহনযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।