চকরিয়া বিএমচরে দুই দফা হামলার ঘটনায় মামলা হলেও আসামিরা বহাল তবিয়তে

চকরিয়া বিএমচরে দুই দফা হামলার ঘটনায় মামলা হলেও আসামিরা বহাল তবিয়তে
চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নে জমি বিরোধ জেরে প্রতিপক্ষের দু'দফা হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে নারীসহ ৮ জনকে জখম করেছে। এ ঘটনায় গত ১৪ এপ্রিল বিএমচর বেতুয়ারকুল এলাকার মৃত ওসমান গণির ছেলে ইসহাক আহমদ বাদি হয়ে ১৪ জনের নামে এবং ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর একই ইউনিয়নের বাক্কারপাড়া এলাকার মৃত এমদাদ আহমদের ছেলে আলী আহমদ বাদি হয়ে ৫ জনের নামোল্লেখ করে চকরিয়া থানায় দুইটি মামলা করেছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করে বলেন, হামলার ঘটনায় দুইটি মামলা হলেও এজাহারনামীয় আসামি জামাল উদ্দিন মনু, গিয়াস উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম জিহাদ এলাকায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এ অবস্থায় উল্টো আসামিপক্ষের নানাবিধ হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।
বাদি ইসহাক আহমদ গংয়ের লোকজন জানান, জমি দখলে নিতে দিনদুপুরে হামলা চালিয়ে গুলিবর্ষণ করে ও কুপিয়ে নারীসহ ৬ জনকে গুরুতর জখম করেছে। শনিবার ১৩ এপ্রিল দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে বিএমচর খাসমহাল জামে মসজিদের পাশে ঘটেছে এ হামলার ঘটনা।
হামলায় আহতরা হলেন, বিএমচর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেতুয়ারকুল এলাকার বাসিন্দা জমি মালিক স্থানীয় মৃত মোস্তাক আহমদের ছেলে মসজিদের মুয়াজ্জিন ফরিদুল আলম (৭০), ফরিদুল আলমের ছেলে জয়নাল আবেদীন (৪২), জুনাইদুল ইসলামের ছেলে আবুল কাশেম (১৮), নবী হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম (২২), ফরিদুল আলমের ছেলে নেজাম উদ্দিন (৩৬) ও আসহাব উদ্দিনের স্ত্রী আজবাহার বেগম (৩২)।

ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক আহত জয়নাল আবেদীনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, অন্য আহত আবুল কাশেম, শহিদুল ইসলাম ও ফরিদুল আলমকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
জমি মালিক ফরিদুল আলম অভিযোগ করে বলেন, বেতুয়ারকুল এলাকার বাসিন্দা মৃত আবদুল আলীর ছেলে ছৈয়দ আহমদ ও মৃত আবদুল হাকিমের ছেলে নুর আহমদ গং আমার পৈতৃক বেশকিছু জায়গা দখলে নিতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এরই জেরধরে সর্বশেষ শনিবার দুপুরে ছৈয়দ আহমদ ও নুর আহমদ গং অবৈধ অস্ত্রে দলবদ্ধ হয়ে ১০/১২ জনের একটি দল আমি মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার মুহূর্তে হামলা চালায়। 
আহত ফরিদুল আলম অভিযোগ করে বলেন, হামলার সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জামাল উদ্দিন মনু নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা প্রথমে আমার উপর ও পরে আমাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসা আমার ছেলে এবং আত্মীয় স্বজনের উপর গুলিবর্ষণ করে। কয়েকজনকে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন আহত জমি মালিক ফরিদুল আলম।
অপরদিকে আগের মামলার বাদি আলী আহমদ জানান, আমার জমি দখলের জন্য হামলা চালিয়ে আমার ছেলে হাসান আলীকে গুলি করে হত্যা করে এজাহারনামীয় আসামিরা। এ ঘটনায় পাঁচজনের নামোল্লেখ করে চকরিয়া থানায় একটি মামলা করি। ইতোমধ্যে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও জমা দিয়েছেন। তারপরও মামলার একজন আসামি অদ্যবদি গ্রেফতার হয়নি। এতে আসামিরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
ভুক্তভোগী জমি মালিকরা জানান, এজাহারনামীয় আসামি  জামাল উদ্দিন মনু ও গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানা ও আদালতে ১৪৩/২৪, জি,আর ৪৫৪/২৩, জি,আর ৪৮৪/১৮, জি,আর ৫৮৩/১৭, জি,আর ২৫০/১৬, জি,আর ৬০৯/১২, সি,আর ১৫৭৮/২৩, সি,আর ২০২৮/২৩ মামলা চলমান রয়েছে।
দুই মামলার বাদি ইসহাক আহমদ ও আলী আহমদ মামলার এজাহারনামীয় আসামি গ্রেফতারে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ও চকরিয়া থানার ওসির জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত পক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার


পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.