বদরখালীতে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে ঝগড়া থেকে খুন, ৩ ভাইয়ের ফাঁসি

বদরখালীতে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে ঝগড়া থেকে খুন, ৩ ভাইয়ের ফাঁসি
কক্সবাজারের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে তুলে নিয়ে জবাই করে হত্যার দায়ে তিন ভাইকে মৃত্যুদÐের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাদের পৃথক ধারায় যাবজ্জীবন কারাদÐেরও আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া আরেক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদÐ ও অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় আরেকজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছিল, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আসামিরা মো. নুরুল হুদা নামে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।
রোববার (৬ মার্চ) চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ রায় দিয়েছেন।
মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত আবু বক্কর সিদ্দিক, ইউনুস হোসাইন মানিক ও ইব্রাহিম মোস্তফা আবু কাইয়ুম কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে। তারা খুন হওয়া নুরুল হুদার ভাতিজা।
যাবজ্জীবন দÐ দেওয়া হয়েছে একই এলাকার নুরুল আজিজের ছেলে মো. সোহায়েতকে। এছাড়া একই গ্রামের মো. শেফায়েত নামে আরেক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
খুন হওয়া মো. নুরুল হুদা (৬০) বদরখালী বাজারের ‘মামণি ক্লথ স্টোর’র মালিক এবং বদরখালী ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।

মামলার নথিপত্রের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আইয়ূব খান জানান, ২০১৬ সালের ৩০ জুন রমজানের সময় রাতে তারাবির নামাজ শেষে নুরুল হুদা বদরখালী বাজারের ফেরিঘাটে হোটেল মজিদিয়ায় বসে চা-নাস্তা খাচ্ছিলেন। এসময় টেলিভিশনে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমের একটি সংবাদ প্রচার হচ্ছিল। সেটি দেখে নুরুল হুদা মন্তব্য করেন-শেখ হাসিনা বাপের বেটি, সকল রাজাকারের বিচার হবে।
তখন দোকানের বাইরে বসা ছিলেন তার আপন ভাতিজা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি ভেতরে এসে চাচার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন-তাকে (আবু বক্কর) উদ্দেশ্য করে নুরুল হুদা এ মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে আবু বক্করসহ ৫-৬ জন মিলে তাকে টেনেহিঁচড়ে দোকান থেকে বের করে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। অপহরণের মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে তাকে বদরখালীর তিন নম্বর বøকের টোটিয়াখালী এলাকার কিল্লায় নিয়ে জবাই করে ফেলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নুরুল হুদার ছেলে মো. শাহজাহান বাদি হয়ে ২০১৬ সালের ৩ জুলাই চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়। ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। বিচার কার্যক্রম শুরুর পর ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে রাষ্ট্রপক্ষ।
পিপি আইয়ূব খান জানান, অপহরণের অভিযোগে দÐবিধির ৩৬৪ ধারায় পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদÐ ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় খুনের অভিযোগে দÐবিধির ৩০২ ধারায় তিনজনের মৃত্যুদÐ দিয়েছেন আদালত। দÐিতদের মধ্যে আবু বক্কর ছাড়া বাকি আসামিরা পলাতক আছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

চট্টগ্রাম


পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.