সোস্যাল মিডিয়া

সোস্যাল মিডিয়া
দুপুরে খাওয়ার পর একটা গল্পের বই নিয়ে পড়ছি, তখন শুনি বাচ্চাদের নাচানাচির দপদপানি। দেখি মোবাইলে এক বয়স্কলোক জোয়ানীর নাচ আর তাই দেখে কেউ নাচ্ছে, কেউ নাচের চেষ্টা করছে আবার কেউ হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি করছে। কিছু না বলে সরে আসলাম। যুগ পাল্টেছে, কিছু বলাটা ঠিক হবে না। মোবাইল ফোনে এ সব হর হামেশা চলছে। এ যুগ সোস্যাল মিডিয়ার যুগ। এ সোস্যাল মিডিয়া রেঁনেসার চেয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক বেশী বিপ্লব ঘঠিয়েছে। পৃথিবীর এক প্রান্তের খবর তাৎক্ষনিক অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। যা কোন সময় চিন্তার বাইরে ছিল। কানাডায় কত ডিগ্রী বরফ পড়ছে, গাজায় কি হচ্ছে, শুধু বিদেশের না দেশের  বিভিন্ন পরিস্তিতির খবর মিনিটেই পাওয়া যায়। যার কিছু পজিটিভ আবার কিছু নেগেটিভ প্রভাব আমাদের মাঝেও পড়ে। 
আমরা জানতে পেরেছি ছাত্র বিপ্লবের ঘটনা, বন্যায় সেনা বাহিনী, স্থানীয় জনগনের সহযোগিতা, পূনর্বাসন; ইসকনের ঘটনা, সনাতন ধর্মীদের সমাবেশ, হযরত আদম (আ) থেকে শুরু করে জানবার এমন কোন কিছু নাই যা আপনার হাতের মুঠোয়।        
সোস্যাল মিডিয়া কখন, কেন আবিস্কার করেছিল, আর কত রকমের অ্যাপস যে আছে যেমন ই মেইল, ফেস বুক, ওয়াটস অ্যাপ, ভাইভার, ইমো, ম্যাসেনজার, ভিডিও কল, ঝুম নিত্য নতুন অ্যাপস তৈরী হচ্ছে যা বলে শেষ করা কঠিন। এর মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে ফেস বুক।
এ সময় খুব কম জনকে পাওয়া যাবে যে কোন না কোন টার সাথে যুক্ত, অনেকে হয়ত সরাসরি নেই মাগার কারো নাকারো মাধ্যমে যোগাযোগ করে। খোঁজ খবর নেয়। সন্তান কাছে নেই তো ভিডিও কলে কি খাচ্ছে, কোথায় আছে, কেমন আছে জানা যায়। এর মাঝে মা বাবাকে ভালো আছে বুঝানোর জন্য ডংকি সিনেমার পাত্র পাত্রী দের মতো অভিনয়ও করে, বড় বাড়ি, দামি গাড়ীর পাশে, ইয়্যুত ক্লাবের দরজায় দাঁড়িয়ে দেখায় সে মেম্বার। আবার অনেকে যা সত্যি তাই দেখায়। সন্তান দেখায় মায়ের জন্য কি কিনেছে, মা দেখায় কি আচার বানিয়েছে, কি জুতা কিনেছে ইত্যাদি।
কত ঘটনা, অনেকেতো ফেসবুক দেখতে দেখতে খালে বিলে পড়ে গেছে, রাস্তায় কথা বলতে বলতে কখন ছোট বাবুটা হাত ছেড়ে অন্য পথে চলা শুরু করছে খেয়াল নাই, দয়া করে যদি কেউ এনে দেয় তখন হতবাক হয়ে ধন্যবাদ দিতেও ভুলে যান।
মজার মজার কৌতুক, অণুগল্প, পৌরানিক, ভৌতিক কাহিনী, ধমীঁয় বানী, বাণী চিরন্তনি হাজারো তথ্য আমরা পেয়ে থাকি। কি ভাবে সত্তর  বছরেও যৌবন ধরে রাখা যায় , কি ভাবে বয়স্ক লোক যুবতী স্ত্রী কে তৃপ্তি দিতে পারে, খুশির হরমোন কি ভাবে বাড়ানো যায়, সক্রেটিসের থেকে চানক‍্যের বাণী কি নাই?।
যেমন ভাংগা কপালের মালিশ, জীনের সাথে কথা, কালাজাদু, হাটুরে বাবাদের অদ্ভুত কান্ড, যাতে রাতারাতি কোটি পতি হয়ে যাবেন। আচ্ছা ভাংগা কপাল যদি মালিশ করে কেউ কিছু সুফল পেয়ে থাকেন, আমি অপেক্ষায় রইলাম, হাঁটের বাবারা যদি অন্যদের কোটিপতি বানিয়ে দিতে পারে উনি নিজে কেন হাঁটে বাজারে, গাছের তলায় বসে থাকার কথা বরং তামিল সিনেমায় দেখানো মহলে থাকার কথা সাথে আনুসাংগিক। তবে যারা পোষ্ট দেন দয়া করে বানান গুলো ঠিকঠাক যেন দেন, যদি আমার বানানে ভুল থাকে ক্ষমা চাই, বাংলা একাডেমি অনেক পরিবর্তন এনেছে, যেমন তোমরা স্থানে তুরা, খাইসি, হোটেলের খাবারের , টয়েলটের ব্যবহারের বানান এসব মনে হয় পরিবর্তন করে নি। 
আবার প্রেমিকার ছবি দিবে কিন্তু  মুখের উপর একটা ইমো দিবে, বাবা দিবেই যদি মুখটা সহ দে, ইজ্জতের সওয়াল হয় নিজের কাছে রাখ! মজার বিষয় সুন্দর একটা জায়গায় গিয়ে ছবি আপলোড করবে, কিন্তু ভদ্রলোকের চেহারা ছাড়া বাকিরা এমন বোরকা পড়ে আছে শুধু চোখ ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। কার ছবি কেউ বুঝার উপায় নাই।
খুব চল চলছে টিকটক, রীল, কারে কি বানিয়ে ছাড়ছে, শীলা কি যোয়নী, মোবইল কি ভাবে চালাবেন, হেন কিছু নাই যা পাবেন না। দেবর ভাবীর প্রেম গাঁথা, পাশের বাড়ীর মেয়ের সৌন্দর্য্য, এর সাথে ওর ঝগড়া , কারো মান হানি করার কৌশল, বিয়ের দাওয়াত, দোকান উদ্বোধন, বিবাহ বার্ষিকী, সব পাবেন। কেউ ছাদ বাগান করেছে, মাছের চাষ করেছে, তা দেয় যা অন্যদের উৎসাহিত করে। অনেক সময় ফেস বুকে মান অভিমানও চলে, যে বুঝার সে বুঝে, বাকিরা কি বুঝে তারাই জানে। কেউ কোথাও গেছে, বাসে ঘুমাচ্ছে, এসব অনেক সময় রিস্ক হয়ে যায়, যদি কোন প্রতিপক্ষ থাকে, সে বা তারা এ সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে।
মিডিয়ার মাধ্যমে ভুঁয়া খবর ছড়িয়ে নিজেদের মধ্যে হানাহনি, মারামরি, খুনাখুনি পর্যন্ত গড়ায়, সন্ত্রাস, উগ্রবাদের সৃস্টি করে সমাজটা কে নস্ট করে। শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিয়ে সমাজকে সুস্থ্য করার দায়িত্ব আমাদের সবার।
যুব সমাজ হচ্ছে আগামীর ভবিষৎ, আর প্রায় সবার হাতে এনরয়্যট মোবাইল, কিছু কিছু মিথ্যা প্রচার, তাদের উত্তেজিত করে, প্ররোচিত করে ডান্ডা, লাঠি, ছুরি নিয়ে মারতে যায়। তাদের সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য সরকারী, বেসরকারী উদ্যোগ নেওয়া উচিত, তা না হলে আমরা একটা উগ্রবাদীদের সমাজ পাবো, যা দেশের জন্য ক্ষতিকর।
আজকাল মায়েরা এত ব্যস্ত বাচ্চার হাতে ট্যাব, মোবাইল কিছু একটা ধরিয়ে দিয়ে নিজে মোবাইলে মশগুল থাকে, মা ডাকার আগে ড্যাডি ফিংগার বা টুংকেল টইুংকেল লিটল স্টার শিখে, তবে কিছু ভালো দিক হচেছ অনেক বাচ্চা ভাল ইংরেজি শিখে, বুঝে. বলতে পারে। ম্যথুয়ে ল্যবে প্রশিক্ষণের সময় সন্তানের মোবাইল ব্যবহারে কড়া নজর দিতে বলেছেন, এমন কিছু গেইম আছে যা বাচ্চাদের উপর নেগেটিভ প্রভাব পড়ে, পরে নিজের অজান্তে ঐ গেইমের চরিত্র হযে পড়ে, পরে ঐ পথে আগায়। দয়া করে সাবধান হউন।
আমার এক বন্ধু সকাল বেলায় চা আর ডিম পোচের পোষ্ট দিয়েছিল, হঠাৎ শুনে দরজায় কেউ একজন কড়া নাড়ছে, ভব্যতার খাতিরে জানতে চাইলে জানায় ভাবী আমি আপনার ফেইস বুক ফ্রেন্ড, সকালে আপনার পোষ্ট দেখে ভাবলাম ব্রেকফাস্টটা এখানেই করে যায়! ভাবুন কি পরিস্তিতি!
আর যদি নামের কথায় আসি কি সব নাম, নির্জল নীলাচল, অবুঝ মন, সমুদ্র কন্যা,সুজন প্রেমিক,অদৃশ্য প্রজাপতি এ রকম অনেক। আরে মা বাবা গরু ছাগল জবাই করে আকিকা দিয়ে নাম রেখেছে, তার কি দাম! হয়ত গোপন কোন বিষয় থাকতে পারে। অনেকে প্রোফাইল লক করে রিকোয়েস্ট পাঠায়, কে একস্পেট করবে, তিনি কি সন্রাসী, কোন বিশেষ দলের, তা না জেনে করবে! অনেকে বার বার পোষ্ট দেয়, প্রোফাইল লক করে রিকোয়েস্ট পাঠায়, অনেকে লক পোফাইলে রিকোয়েস্ট না পাঠানোর জন্যপোস্ট দেয়, কে শুনে কার কথা! কেউ দু তিনটা আইডি ব্যবহার করে,যদি লাইগ‍্যা যায়!
বাবা হয়েছেন,  আলহামদুলিল্লাহ, কাথাঁ জড়ানো ছবিটা শিশুর উপর কি রে‌ পড়ছে না। আমরা তো আর বচ্চন না রুমে ক্যমেরা লাগিয়ে আরাধ্যার বেড়ে উঠা দেখার সার্মথ্য নাই।
আসি ইউটিউবের কথায়, এমন সব জ্ঞানের ভান্ডার, রাতারাতি ফর্সা হয়ে যাবেন, ফেয়ার এন্ড লাভলির দরকার নেই, তা হলে তো নিগার রা , কি হতো নিজেকেই প্রশ্ন করেন। হাজার রকমের রান্নার রেসিপি, কিন্তু সীম বীচির সাথে শুটকি, কাচাঁ মরিচ বেগুন দিয়ে ইলিশ, কাচাঁ মরিচ দিয়ে মোরগ সাথে মাউট্ট্যা আলুর স্বাদ কি পাবেন, লাকড়ির চুলায় পুড়ানো ভাপা পিঠা!ইয়ো টিউবের কল্যানে যায় যায়।
ফ্যাসনের কথায় আসি,  সিগারেট খাওয়া যা এক সময় বনেদি ঘরের মেয়েদের জন্য নিষিদ্ধ চিত্রালী ঘরে প্রবেশ নিষেধ। বিকেলে বা সন্ধ্যায় বীচে গিয়ে দেখেন, কি পরে আছে, যা অন লাইনের মাধ্যমে কিনেছে। আমি ফ্যমিনিস্টের বিপক্ষে না। পরকীয়া প্রেমের বড় একটা প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া, করেন প্রেম, ডাকেন সংসারে অশান্তি! চুলের রং, খয়েরি, ময়ূর কন্ঠী, ম্যাস, অ্যাস কত কি, কত দিন পর চুল আর সহ্য করে না পড়া শুরু করে। চুলের কাটিং হয় ঝুটি নয় ছাট, আমরা পাতিলা বা কদম কাট বলতাম। কি গ্যাঁইয়া ছিলাম। এ প্রসংগে একটা সত্যি ঘটনা বলি, বোন বিদেশ থেকে জেল এনেছে, দেওয়ার নিয়ম না পড়ে মাথায় লগিয়ে শুয়ে পড়েছে, সকালে নিজেকে আয়নায় দেখে , নিজেই বেকুব, বাড়ির সবাই হতবাক, ছোট ভাই ছবি আপলোড করলে সে কি রাগ,পরে কান্নাকাটি, তা দেখে বাপ অন্য কেউ না দেখার আগে সেলুনে গিয়ে ডাব্বা করে নিয়ে আসছে। আমার এক স্নেহের ছোট ভাই বিদেশে থাকে প্রতি শুক্রুবারে বিশাল পোস্ট দেয়, তবে নাম ম্যানসন করে না,এটা তার স্বাধীনতা বা ক্ষোভ প্রকাশের একটা হাতিয়ার।
মিডিয়ার মাধ্যমে অনেক সময় রক্তের প্রয়োজন, সন্তান হারিয়ে গেছে, কারো মৃত্যুর সংবাদ (মৃত ব্যক্তির  ছবি দেন, ছবি দিলে যদি বেহেস্ত বা স্বর্গে যান তো ঠিক আছে), কারো বদলি হয়েছে, কারো প্রমোশন হয়েছে ,জানা দরকার, কারণ অফিসে গিয়ে সঠিক ব্যক্তিকে স্বাগত , শুভেচছা জানানো ,পরবর্তিতে কাজে লাগবে।
ই মেইলের কথা, মুখে মধুর ভাষা, কিন্তু মেইল যে করে, ভাষায় মনে হয় আস্ত একটা গাধার কাছে লিখেছে। চলে অসম প্রতিযোগিতা, নিজেকে জাহির করে, অন্য কে খাটো করা, এগুলো ইগনোর করেই  যাওয়াটেই বুদ্ধিমানের কাজ। কিছু সবজান্তাদের কাছে থেকে সন্তুস্টি আশা করাটা ভুল।অনেক সময় হেড গেম ব্লেমিং বলে থামিয়ে দেয়।এতে কি ক্ষোভ কমে না, সাময়িক স্থগিত থাকে, সুযোগ বুঝে উসুল করে।
ওয়াটস এ্যপে গোপন কথা চালাচালি হয়, তার সুযোগ নিয়ে অসংখ্য গ্রুপ, এতো গ্রুপের প্রয়োজন আদৌ আছে কি! কিন্তু এখন তাও রেকর্ড করতে পারার অ্যপ এসে গেছে। সাধু সাবধান!
 ইদানিং ভালো দিক হচেছ এনজিও রা ভালো উদ্যোগ নিয়েছে, তাদের ওরিয়েনটেশন, ট্রেনিং এ সোস্যাল মিডিয়ার ভাল দিক মন্দ দিক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করে। এতে অনেকের ভালো পরিবর্তন আসে আবার কেউ এ কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দেয়, জোর করে তো পরিবর্তন করা যাবে না যদি সে নিজে হতে না চায়।
ট্রেনে করে কোথায় যাচ্ছিলাম, এক দেহাতি মা জানালো, ভিডিও কল, ম্যসেনজার আমাদের দুরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে, আগে ছেলে মেয়েরা ছুটির দিনে, পার্বনের ছুটিতে বাড়ী আসতো, এখন কলে সারিয়ে নেয়। মা বাবা বুকের ভিতরের কষ্ঠটা চেপে রাখে, তাদের ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে।কারো বাড়িতে যান দেখবেন বাবা,মা, ছেলে মেয়ে সবাইর হাতে মোবাইল, তখন নিজেকে অনাহুত মনে হয়। আমাদের এখন আত্বীয় স্বজনের বাসায় আসা যাওয়া কমে গেছে, মোবাইলে খবরাখবর নেওয়া হয়, সামনা সামনি যে সৌর্হাদ্য সেটা নেই।
মাগরিবের পর পুকুর পাড়ে হাঁটতে যাই, প্রতিটি লোকের হাতে মোবাইল সে নারী, ছোঁড়া, মধ্য বয়স্ক, বয়স্ক কথায় মশগুল, আবার অনেকে প্রেমিকার সাথে ভিডিও কলে বন্ধুকে দেখায়, তার প্রেমিকা ক্যাটরিনার চেয়ে সুন্দর, কেউ বা বলে একটা গেলে কি আসে যায়, লাইনে অনেক আছে, কি প্রেম! আমিও সোস্যাল মিডিয়ার এর বাইরে না।টুং টুং আওয়াজ মোবাইলে চলতেই থাকে।
একটা বিষয় না বলে পারছি না ফোন কল করে বলা শুরু করে, কাকে করেছে, কি জন্য করেছে তার ধারে কাছেও নেই, এ্যটিকেট হচেছ নিজের পরিচয় দেওয়া, কার সাথে আলাপ করতে চান তা জানানো, সময় হবে কিনা জেনে নেওয়া।
এসব লিখে শেষ করা যাবে না, পর্বের পর পর্ব লিখতে হবে। যা বিরক্তিকর। আমার দৃস্টি থেকে কথা গুলো লিখলাম, কারো পছন্দ হতে পারে আবার পছন্দ নাও হতে পারে, তবে সোস্যাল মিডিয়ার বিপক্ষে আমি না। এর সঠিক ব্যবহারটা আমাদের জানা উচিৎ এবং জানানো।
জয়তু সোস্যাল মিডিয়া।

আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার


কলাম

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম

© 2025 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.