॥লায়ন মুহাম্মদ শওকত আলী নূর ॥
আমাদের জাতীয় ইতিহাসে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এক অবিস্মরণীয় নাম। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা এই উপমহাদেশের মেহনতী মানুষের প্রতিবাদী ০কন্ঠস্বর হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন এবং পাকিস্তানী শোষনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা চিন্তার তিনিই প্রথম অগ্রনায়ক। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তিনি এদেশের মানুষকে দেশপ্রেম, গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার ও শ্রদ্ধা এবং স্রোতের বিপরীতে দাঁড়ানোর সাহস, নির্যাতনের মুখেও অবিচল আপোষহীন থাকার প্রেরণা জুগিয়ে ছিলেন। এককথায় কৃষক শ্রমিক সাধারণ মানুষের স্বার্থের পক্ষে রাজনৈতিক সংগ্রামের অন্যতম প্রধান পুরোধা মাওলানা ভাসানী।
১৮৮০ সালে এই মহান মজলুম নেতা সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ এলাকায় মক্তবে শিক্ষার সূচনা হলেও পরবর্তীকালে ১৯০৭ সালে ভারতের বিখ্যাত দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তিনি এইখানে শায়খূল হিন্দ নামে খ্যাত প্রগতিশীল ইসলামী চিন্তাবিদ মাহমুদুল হাসানের সংস্পর্শে আসেন। তাঁর নিকট বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ও রাজনীতির হাতে খড়ি হয়েছিল মাওলানা ভাসানীর।
এর অনেক পরে আসামের ভাসানচর এলাকার গরীব নির্যাতীত কৃষকদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে মাওলানা আবদুল হামিদ খান সকলের নিকট ‘ভাসানী’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
১৯১৯ সালে মাওলানা ভাসানী কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং খেলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে প্রায় দশমাস কারাদন্ড ভোগ করেন। ১৯৩৭ সালে তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। ১৯৪০ সালে শের-এ বাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে মুসলিম লীগের লাহোর সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৪৪ সালে তিনি আসাম মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান আন্দোলনে অংশ নিয়ে আসামে গ্রেফতার হন। ১৯৪৮ সালে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন।
ব্যবস্থাপক সভার কার্যাবলী বাংলায় পরিচালনার জন্য তিনি স্পিকারের নিকট দাবী জানান। বাজেট বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক পূর্ববঙ্গ থেকে সংগৃহীত করের ৭৫% এই প্রদেশকে দেয়ার জোর দাবী তুলেন। মুসলিম লীগের সদস্য হয়েও সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বক্তৃতা ও সমালোচনার জন্য ক্ষমতাসীনরা তাঁর উপর অসুন্তুষ্ট হয়ে নানা অনৈতিক আচরণ করলে তিনি ব্যবস্থাপক সভার সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৪৯ সালের ২৩-২৪ জুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের জনবিরোধী কার্যকলাপের ফলশ্র“তিতে মাওলানা ভাসানী ঢাকার রোজ গার্ডেনে মুসলিম লীগের কর্মী সম্মেলন আহবান করেন। ২৩ জুন এই কর্মী সম্মেলনে প্রায় ৩০০ কর্মী যোগদান করেন। এই মহতীসভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব আতাউর রহমান খান। প্রধান অতিথি ছিলেন মাওলানা নিজেই। এই দিনই ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীনের পর পূর্ববঙ্গের প্রথম বিরোধী দল পূর্বপাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করা হয়। মাওলানা ভাসানী এই নবগঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৪৯ সালে তৎকালীন সরকারের খাদ্য সমস্যা সমাধানের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে আওয়ামী মুসলিম লীগ জনসভা করে এবং পূর্ববঙ্গ মন্ত্রীসভার পদত্যাগ দাবী করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ভূখা মিছিলে ভাসানী নেতৃত্ব দেন। ফলে ১৯৪৯ সালের ১৪ অক্টোবর তিনি গ্রেফতার হন।
১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে ঢাকা বার লাইব্রেরী হলে এক সভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ গঠন করা হয়। এই জন্য প্রায় ১৬ মাস তাকে কারাভোগ করতে হয়। ১৯৫৩ সালের ৩ ডিসেম্বর শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে সঙ্গে নিয়ে মাওলানা ভাসানী পূর্ববঙ্গের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের জন্য ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামক নির্বাচনী মোর্চা গঠন করেন। হক-ভাসানী- সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট পূর্ববাংলার প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসন লাভ করে মুসলিম লীগ সরকারকে চরমভাবে পরাজিত করে। ইতিমধ্যে যুক্তফ্রন্ট সরকারের পতন হলে ১৯৫৪ সালে মে মাসের পর থেকে ১৯৫৫ সালের ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ১১ মাস তিনি সরকারের বিধিনিষেধের কারণে দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হন। ১১ মাস পরে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ১৯৫৬ সালে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ও রিপাবলিকান পার্টির কোয়ালিশান সরকার গঠিত হলে মাওলানা ভাসানী সরকারের পররাষ্ট্রনীতির বিরোধীতা করে নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বনের জন্য সরকারের উপর জোর চাপ প্রয়োগ করেন।
১৯৫৭ সালে (৮ ফেব্রুয়ারি--১০ ফেব্রুয়ারি) কাগমারী সম্মেলনে মাওলানা ভাসানী বক্তৃতায় অন্যান্য বিষয়ের সাথে অন্যতম কথাটি বলেন, “পুর্ব বাংলা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসকদের দ্বারা শোষিত হতে থাকলে পূর্ববঙ্গবাসী তাদের আসসালামু আলাইকুম জানাতে বাধ্য হবে।” তাছাড়া তিনি পাক মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিলেরও দাবী জানান।
প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দীর সেই দাবী প্রত্যাখ্যান করলে ১৯৫৭ সালের ১৮ মার্চ তিনি আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করেন এবং একই বছর ২৫ জুলাই ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠন করেন। ১৯৬৪ সালে আইয়ুব বিরোধী সম্মিলিত বিরোধী দল (কপ) গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৬৬ সালে ৬ দফা কর্মসূচির বিরোধীতা করলেও ১৯৬৯ সালের আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন এবং আগরতলা মামলার আসামীদের মুক্তি সংগ্রামে ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন ময়দানে এক জনসভায় স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের দাবী উত্থাপন করেন। ১৯৭০ সালে ঘূর্নিঝড়ে পূর্বপাকিস্তানের ১০ লক্ষ লোক মারা যাবার পর মাওলানা ভাসানী বলেছিলেন, “ওরা আসেনি” স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান জিন্দাবাদ। সেই দিনই তিনি পশ্চিমাদেরকে বিদায় করার কথা পক্ষান্তরে উচ্চারণ করেছিলেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন প্রদান করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ভারতে যান এবং মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী তাঁর গ্রামের বাড়ি পুড়িয়ে চারখার করে দেয়। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি মাওলানা ভাসানী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এসেই স্বাধীন বাংলাদেশে ২৫ ফেব্রুয়ারি সাপ্তাহিক ‘হক কথা’ প্রকাশ করেন। উল্লেখযোগ্য যে, পাকিস্তানী আমলে তিনিই দৈনিক ইত্তেফাক এর প্রকাশক ও সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ইত্তেফাকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। মাওলানা প্রায়ই একটা কথা বলতেন, “দল বড় নয়, দেশ বড়, দেশের মানুষ বড়।” তখনকার সময়ে সাপ্তাহিক ‘হক কথার’ পাঠক সংখ্যা মনে হয় সর্বোচ্চ ছিল। দেশের সর্বশ্রেণীর পাঠকের কাছে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে এবং সরকারের গঠনমূলক সমালোচনায় হক কথা কখনো আপোষ করেনি। সরকারের রক্ত চক্ষুকে ভয় পায়নি। সত্য প্রকাশে মাওলানার ‘হক কথা’ সত্যিই এক দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছিল। মাওলানা এদেশের মানুষকে অন্যায়, অসত্য, জেল জুলুমের, শাসকদলের ভ্রুকুটি, শত্র“র চোখ রাঙ্গানীকে অগ্রাহ্য করে রুখে দাঁড়ানোর সাহস দিয়েছিলেন, বাণী শুনিয়েছেন। আপোষহীন সংগ্রামের অগ্নিপুরুষ মাওলানা ভাসানী। ১৯৭৬ সালে ১৬ মে ভারতের ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ৯১ বছর বয়সেও তিনি লং মার্চে নেতৃত্ব দেয়ার মত গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন।
এদেশের মানুষের কাছে তিনি এক কিংবদন্তী, বিস্ময়কর ইতিহাস। এক গ্রাম্য যুবক, প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া খুব বেশি না হলেও ভাসানীর রাজনৈতিক ধারা তাঁরই একান্ত নিজস্ব। কংগ্রেস বা মুসলিম লীগ এর উচ্চ শিক্ষিত ও বড় লোকদের থেকে তিনি প্রেরণা নেন নাই। তার রাজনৈতিক প্রেরণা ছিল আঠার-উনিশ শতকের কৃষক বিদ্রোহগুলো, ফকির বিদ্রোহ, তিতুমিরের বিদ্রোহ, নীলকরদের বিদ্রোহ, হাজী শরীয়তউল্লাহ, দুদু মিয়াদের জমিদার ও ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আন্দোলনগুলো দ্বারা তার চিন্তা চেতনা প্রভাবিত হয়েছিল। এদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তাঁর পরের প্রতিটি রাজনৈতিক নেতা মাওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক ছাত্র বা শিষ্যের মত। চিরত্যাগী এই মহান নেতা ছিলেন লোভ-লালসা এবং ক্ষমতার লিপ্সার ঊর্ধ্বে। আবদুল গাফফার চৌধুরী লিখেছিলেন, “আমাদের মিলিত সংগ্রাম মাওলানা ভাসানীর নাম। তিনি নিপীড়িত, বঞ্চিত, লাঞ্চিত জনগণের মুকুটহীন সম্রাট, শতাব্দীর মহানায়ক।” রাজনীতি আজ আমাদের দেশে যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তখন তার মত একজন ভাসানীর খুবই অভাব দেশও জাতি অনুভব করছে। তিনি রাজনীতি বিষয়ে বলেছেন, “রাজনীতি হচ্ছে এমন একটি মহৎ কর্মপ্রয়াস যার লক্ষ্য সমাজ থেকে অন্যায় অত্যাচার, শোষণ ও নির্যাতনের অবসান করে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সমাজের সব মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ ও মঙ্গলের পথ প্রশস্ত করা। সমাজে ন্যায় বিচার, আইনের শাসন, বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা তথা সামগ্রিক গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা।” আজ সময় এসেছে জাতির বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা মাওলানা ভাসানীর জীবন নিয়ে আলোচনা করা। কিভাবে তিনি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন তা সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার। সরকারীদল, বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের নেতৃত্বদানকারী সকলেই ছিলেন মাওলানার শীর্ষ। কাজেই আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের জন্য তাঁর জীবনের ভালদিকগুলো আমাদের সকলেরই অনুসরণ করা একান্ত প্রয়োজন। তাছাড়া দেশের ন্যাশনাল কারিকুলাম বোর্ডের প্রতি আবেদন এই যে, জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের জীবনী এই উপমহাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। কাজেই দেশের প্রতিটি কোমল মতি শিক্ষার্থীরা থেকে শুরু করে উচ্চতর পর্যায় পর্যন্ত মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন ও ইতিহাস যেন পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
ইতিহাস ইতিহাসই। তাই আমাদের প্রত্যেকটি প্রজন্মকে যেন দেশের সঠিক ইতিহাস জানাই। এই ইতিহাস রচনায় মাওলানা ভাসানীকে কোনভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই। মাওলানাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশও এই উপমহাদেশের ইতিহাস অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তিনিই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে বেগবান করতে যেই সংবাদপত্র দৈনিক ইত্তেফাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, সেই ইত্তেফাকের তিনিই প্রতিষ্ঠাতা। তাই স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে মাওলানা ভাসানী অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাকে বাদ দিয়ে কিছু লিখা মানেই ইতিহাস বিকৃতির নামান্তর। যে জাতি তাঁর সূর্য সন্তানকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারবে না, সেই জাতির সার্বিক উন্নতি সত্যিই সম্ভব নয়।
১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে এ দেশের নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের বরেণ্য নেতা সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বড় বড় আন্দোলনের পাশাপাশি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন। এদেশে অনেক জ্ঞানীগুণী রাজনৈতিক নেতাও তৈরি করেছেন মাওলানা ভাসানী। সামান্য এই পরিসরে তাঁর মত অবিসংবাদিত নেতার সবকিছু তুলে ধরা সম্ভব নয়। আবারো বলবো, বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও সরকার যারাই দেশ পরিচালনা করুন না কেন, মাওলানা ভাসানীর প্রাপ্য মর্যাদা ও সম্মানটুকু যেন সত্যিকারভাবে মনখুলে দেয়া হয়। দেশের সম্প্রতও পতিত স্বৈরশাসক এর সময়ে আমাদের জাতীয় নেতাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ ছিল না। তাঁদের অবদানকে নতুন প্রজন্মদের কাছে সঠিক ভাবে উপস্হাপন কার হয়নি, করতে বাঁধা ছিল। কাজেই দেশের বর্তমান বাস্তবতায় সরকার এবং প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের ও আমজনতার কাছে মাওলানা ভাসানীকে তুলে ধরা অপরিহার্য। স্কুল কলেজের সিলেবাসে মাওলানা ভাসানীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।
লেখক: কলামিস্ট ও রাজনৈতিক কর্মী