পর্যটকে হাসি ফুটেছে সেন্টমার্টিনবাসীর

পর্যটকে হাসি ফুটেছে সেন্টমার্টিনবাসীর
দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস পর সেন্টমার্টিনে পর্যটকরা
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে দুই মাস বিলম্বে পা পড়েছে পর্যটকের। তারপরও পর্যটকের আগমনে মুখে হাসি ফুটেছে দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দার। তারা বলছেন, পর্যটক আগমনে প্রাণ ফিরবে দ্বীপের। চাঙা হবে সকল পর্যটন ব্যবসা। দূর হবে আর্থিক অনটন। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সকল জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা হাফেজ উল্লাহ; পেশায় একজন ডাব বিক্রেতা। পর্যটকদের কাছে ডাব বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস সেন্টমার্টিনে আসেনি কোন পর্যটক। এতে নানা কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে তার। তবে এখন দ্বীপে পর্যটক আগমনে মুখে হাসি ফুটেছে হাফেজ উল্লাহ’র।
তিনি বলেন, পর্যটক না আসাতে দীর্ঘদিন ধরে অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি। এখন দ্বীপে পর্যটক আসতে শুরু করায় অনেক ভাল হয়েছে। আশা করছি; এখন খুব ভালভাবে সংসার চালাতে পারব।
দ্বীপের আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসমাঈল। পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। দ্বীপে পর্যটক আগমনে তারও কষ্টে দিন পার হয়েছে জানান মোহাম্মদ ইসমাঈল।

তিনি বলেন, পর্যটক না আসলে ইজিবাইক চালিয়ে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ২০০ টাকা আয় করা যায়। কিন্তু তা দিয়ে তো সংসার চলে না। এখন পর্যটক আসাতে প্রতিদিন ১ হাজার টাকার বেশি আয় হচ্ছে। দ্বীপে পর্যটক আসলে আমরা খুব খুশি।
শুধু হাফেজ উল্লাহ বা ইসমাঈল নন; টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহি জাহাজ চলাচল শুরু হবার পর প্রাণ ফিরেছে দ্বীপের বাসিন্দাদের। কর্মচা ল্য এসেছে পর্যটন নির্ভর সব ব্যবসায়।
বার্মিজ দোকানি রহিম বলেন, বেচাবিক্রি ছিল না; তাই দোকানও বন্ধ রেখেছিলাম প্রায় ৮ মাস। এখন পর্যটক আসছে তাই দোকানও খুলেছি। বেচাবিক্রিও হচ্ছে। সুতরাং, কষ্টে দিন হয়েছে।
শুটকি দোকানি জমির বলেন, গেল ১০ দিন হল দোকানে নতুন নতুন শুটকি মাছ এনেছি। এখন পর্যটক আসছে তাদের কাছে শুটকি বিক্রি করব। এবার ব্যবসা ভাল হবে আশা করছি।
দারুচিনি রেস্তোরা ম্যানেজার শফি বলেন, নানা প্রকার তাজা মাছ রেস্তোরায় রয়েছে। পর্যটকরা যেটা পছন্দ করছে, তাদেরকে সেটায় তাৎক্ষনিক রান্না করে দিচ্ছি। পর্যটকরাও এই মাছ খেয়ে খুব খুশি। আমরা পর্যটকদের সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করি সবসময়। আশা করি, এই মৌসুমটা বেশ ভাল কাটবে।
তবে দ্রুত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সকল পর্যটকবাহি জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছে দ্বীপের ব্যবসায়ীরা।
সেন্টমার্টিন বাজার বণিক সমিতির মুখপাত্র নুর মোহাম্মদ বলেন, করোনা আর জেটি ঘাটে সমস্যার কারণে বেশ ক্ষতি হয়েছে দ্বীপের ব্যবসায়ীদের। এখন পর্যটক আসতে শুরু করেছে, সুতরাং এবার ভালভাবে ব্যবসা করা যাবে। এছাড়াও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেও সক্ষম হব বলে আশা করি। তবে দ্রæত সময়ের মধ্যে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সকল পর্যটকবাহি জাহাজ চলাচলের দাবি জানাচ্ছি।
আর জনপ্রতিনিধি জানালেন, জেটি সমস্যায় বিলম্বে দ্বীপে পর্যটকের আগমন হলেও দারুণ খুশি সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, জেটি সমস্যার কারণে বিলম্বে পর্যটক আসছে দ্বীপে। তাই প্রথম দিন থেকে আগত পর্যটকদের ফুল দিয়ে বরণ করছি। আশা করি, আমার পাশাপাশি দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দাও পর্যটক আসাতে খুবই খুশি। চেষ্টা করব, আগত পর্যটকরা যেন কোন ধরণের হয়রানির শিকার না হয়।
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে হোটেল রিসোর্ট গেস্ট হাউজ ও কটেজ রয়েছে শতাধিক। যেখানে রাত্রিযাপন করতে পারে দুই হাজারের মতো পর্যটক।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

পর্যটন

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.