আজ খুলছে সব পর্যটন কেন্দ্র

আজ খুলছে সব পর্যটন কেন্দ্র
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত স্থানীয় পর্যটকদের ভিড়। ছবিটি-গতকাল-তোলা
সৈকতে প্রবেশে থাকছে না নিষেধাজ্ঞা
 

দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস পর আজ বৃহস্পতিবার খুলছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের সকল পর্যটন কেন্দ্র। একই সঙ্গে ৫০ শতাংশ আসন ব্যবহার শর্তে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগুলো। ইতিমধ্যে বুকিং হয়েছে ৬০ শতাংশ (পঞ্চাশ শতাংশ হিসেবে) রুম। আর যাত্রী সামাল দিতে ঢাকা-কক্সবাজার আকাশ পথে বাড়ানো হচ্ছে অতিরিক্ত ফ্লাইট। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কঠোর হবার কথা জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজারের কলাতলীস্থ হোটেল মোটেল জোন; এখানে রয়েছে প্রায় ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ। একই সঙ্গে আছে ৩ শতাধিক রেস্তোরা। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এসব প্রতিষ্ঠান। করোনা মহামারির কারণে গেল পহেলা এপ্রিল হতে বন্ধ করে দেয়া হয় হোটেল মোটেল রিসোর্টসহ রেস্তোরাগুলো। প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল সমুদ্র সৈকতসহ সকল পর্যটন কেন্দ্র। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে খুলছে কক্সবাজারের সকল পর্যটন কেন্দ্র। আর ৫০ শতাংশ আসন ব্যবহারে চালু হচ্ছে হোটেল মোটেল রিসোর্ট ও রেস্তোরাগুলো। সবাই এখন পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। হোটেল ওশান প্যারাডাইসের ফন্ট অফিস ম্যানেজার কাজী আনিসুজ্জামান তারেক বলেন; সবার আগে করোনা নিয়ে সরকারি নির্দেশনা। এখন সব ধরণের নির্দেশনাপূরণ করা হয়েছে। পর্যটকরা হোটেল আসা থেকে যাওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি করোনার সব ধরণের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে ৫০ শতাংশ আসনের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসন বুকিং হয়েছে। সুতরাং আগত পর্যটকদের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। সীগাল হোটেলের ফন্ট ডেস্ক ম্যনেজার তারেকুর রহমান বলেন; পুরোপুরি প্রস্তুত। এখন পর্যটকরা আসলে তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে। আর হোটেল একটি রুম পর্যটকরা ব্যবহার পর সেটি তারা ছেড়ে দিলে পরবর্তীতে ৩ দিন পর্যন্ত ওই রুম কাউকে ভাড়া দেয়া হবে না। ওই দিন রুমটিকে নতুন ধোয়া-মোছা ও স্যানিটাইজ করা হবে। এরপর আবারো ওই রুম নতুন করে ভাড়া দেয়া হবে। প্রশাসনের দেয়া সব ধরণের নির্দেশনা নিশ্চিত করা হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রে খুলে দেয়াতে চাপ বেড়েছে আকাশ পথে। তাই এয়ারলাইন্সগুলো ঢাকা-কক্সবাজার রুটে যোগ করছে অতিরিক্ত ফ্লাইট। ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইন্সের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ইরশাদ হাসান বলেন, পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়াতে বিমানের উপর চাপ বেড়েছে। তাই বৃহস্পতিবার থেকে ৩টি করে ফ্লাইট আসা যাওয়া করবে।

প্রতিটি ফ্লাইটে থাকছে ৭২টি আসন। এখানেও স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পালন করা হবে। যদি সামনে আরও পর্যটক বাড়ে এই রুটে তাহলে বোয়িং বিমানের ফ্লাইট চালু হবে। আর ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে; আগত পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের পাশাপাশি পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হবে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন; বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে প্রবেশে আর নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। সেহেতু পর্যটক আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানে এবং মাস্ক ব্যবহার করে তারজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের বেশ কয়েকটি টহল টিম থাকবে। এছাড়াও সৈকতে প্রবেশের প্রতিটি পয়েন্টে থাকবে আরও কয়েকটি টিম। তারা সবসময় মাইকিং করবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটরাও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবে।
যদি পর্যটকরা মাস্ক ব্যবহার বা স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে জরিমানার আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ সৈকতে দায়িত্বপ্রাপ্তরা সবাই একযোগে কাজ করবে। উল্লেখ্য, কক্সবাজারের পর্যটন খাতে পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। আর সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টে প্রতিদিন রাত্রিযাপন করতে পারে দেড় লক্ষাধিক পর্যটক।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

পর্যটন

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.