কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে বুধবার (১৮ জুন) চকরিয়া উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, হামলা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের দায়ে অন্তত ২০-২৫টি মামলা রয়েছে। ইতোমধ্যে জাফর আলমের হাজিরার জন্য আরও আরেক দফা তারিখ দেওয়া হয়েছিলো। নিরাপত্তার কারণে হাজির করা হয়নি।
এদিকে গত ১৬ জুন জাফর আলমকে কঠোর নিরাপত্তায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশ ভ্যানে কক্সবাজার জেলা কারাগারে আনা হয়েছে। সেখান থেকে বুধবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় চকরিয়া উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হবে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
জাফর আলমের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার সকালে কয়েকটি হত্যা মামলায় আদালতে হাজির করার জন্য দিন ধার্য্য রয়েছে বলে জানান চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এপিপি গোলাম সরওয়ার।
জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল জাফর আলমকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর তাকে ঢাকার যুবদল নেতা শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। গত ১৮ মে চকরিয়া উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৭ নেতাকর্মীকে জাফর আলমের নেতৃত্বে হত্যার অভিযোগ আনেন বিএনপি ও জামায়াত। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা জাফর আলমসহ অন্যান্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। তাকে আদালতে হাজিরার খবরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা তার ফাঁসির দাবীতে মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে উত্তপ্ত হয়ে উঠে চকরিয়ার পৌরশহর। নিরাপত্তার অভাবে জাফর আলমকে ঢাকা থেকে আনা হয়নি। পরবর্তীতে ১৮ জুন আদালতে হাজিরার জন্য নতুন তারিখ ঘোষণা করে আদালত।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান জাফর আলম। তার বিরুদ্ধে সারাদেশে অন্তত ২০-২৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জাফর আলম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন অংশ নিয়ে হেরে যান। জাফর আলম ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন। ২০১৪ সালে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে জয়ী হন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় ৫-৬টি মামলা রয়েছে। আদালতে তার হাজিরা থাকায় সবধরণের নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। কয়েকটি হত্যা মামলায় রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
