মেঘলা আকাশ, মাঝে মাঝে ঝড়ো বৃষ্টি; তারপরও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে থেমে নেই ভ্রমণপিপাসুদের আনন্দ। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেতেছে বালুচর ও নোনাজলে। আর সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তার জন্য লাল পতাকা টাঙানো হলেও মানছেন না অনেকেই। তবে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে লাইফ গার্ড কর্মীরা।
শুক্রবার সকাল ১০টা, চারদিকে মেঘলা আকাশ; বেড়েছে বাতাসের গতিবেগ। মাঝে মাঝে বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো বৃষ্টি। যেন নতুন এক রূপ ধারণ করেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। বৈরী আবহাওয়া হলেও নেই ঢেউয়ের উত্তাপ। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসুরা নেমে পড়ছেন সাগরের নোনাজলে। মেতেছেন সমুদ্রস্নান কিংবা বালুচরে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে। ভ্রমণপিপাসুরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে আনন্দের মাত্রা।
ঢাকা থেকে আসা আরিফুর রহমান বলেন, ৩ নম্বর সংকেত তাই সমুদ্রস্নানে যায়নি। এখন বালুচরে বালি দিয়ে খেলা করছি আপন মনে। ঠান্ডা ও বৃষ্টির মধ্যে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত দেখতে অনেক ভালো লাগছে।
সৌদি প্রবাসি সৈয়দুল করিম বলেন, আকাশে অনেক মেঘ জমেছে। সাগরটা অন্য রকম লাগছে। এখন বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করব। অনেক বেশি মজা করবে।
পর্যটক রফিকুল ইসলাম বলেন, বৈরী আবহাওয়াটা খারাপ লাগছে না। সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজারে প্রচন্ড গরম ছিল। তার কারণে সাগরে যায়নি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে, ঠান্ডা হাওয়া বিরাজ করছে। তাই সাগরে চলে এলাম। বৃষ্টির মধ্যে সাগরে গোসল করতেই মজাটায় আলাদা।
সাগরের বালুচরে টানানো হয়েছে লাল পতাকা। সমুদ্রস্নানে হাটু পানির নিচে নামলেই পর্যটকদের করা হচ্ছে সতর্ক। কিন্তু অনেক তা মানছেন আবার অনেকে তা মানছেন না। তারপরও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে লাইফ গার্ড কর্মীরা।
সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সিনিয়র লাইফ গার্ড কর্মী ওমর ফারুক বলেন, সতর্ক সংকেত রয়েছে। পর্যটকদের হাটু সমান পানির নিচে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। লাল পতাকা টানানো পাশাপাশি মাইর্কিংও করা হচ্ছে। তবে অনেক পর্যটক নিষেধ মানছে না। তবে যে কোন দুর্ঘটনা এড়াতে তৎপরতা রয়েছে লাইফ গার্ডের কর্মীরা।
এদিকে তারকামানের হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকদের সেবার জন্য প্রস্তুত তারা, দেয়া হচ্ছে ছাড়ও। এরই মধ্যে বুকিং হয়েছে ৭০ শতাংশ রুম।
হোটেল কক্স টুডে’র ম্যানেজার তাসবিহা আলম চৌধুরী বলেন, ঈদের প্রস্তুতি তো সব সময় থাকে। এবারও প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। ঈদ হয় তো ৭ জুন, ৮ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত পর্যটকের চাপটা বাড়বে কক্সবাজারে। এরই মধ্যে ৭০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে। বাকিগুলোও কিছু দিনের মধ্যে বুকিং হয়ে যাবে। আশা করি, পর্যটকদের আনন্দের কমতি হবে না।
বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টির কারণে কক্সবাজারকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।