মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মির দখলে থাকলেও সীমান্তের জলসীমা দিয়ে কমেনি মাদকপাচার। প্রতিদিনই সীমান্তের নাফ নদীর জলসীমার কোনো না কোনো পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে মাদকদ্রব্য ইয়াবা, গাঁজা ও ক্রিস্টাল মেথ আইস। তবে সীমান্তের নাফ নদী দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচার ঠেকাতে তৎপর রয়েছে কোস্টগার্ড। আর গেলো ২ মাসে জব্দ করা হয়েছে সাড়ে ৪৫ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য।
সীমান্তের নাফ নদী জলসীমা। এপারে কক্সবাজারের টেকনাফ আর ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। ওপারে কিছু হলেই তা এপার থেকে দেখা যায়।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য সংঘাত চলছে। এরই মধ্য রাখাইন রাজ্যের অনেক শহর দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। কিন্তু তারপরও সীমান্তের নাফ নদী দিয়ে কমেনি মাদকপাচার। প্রতিদিনই মিয়ানমারের নাফ নদী সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে মাদকদ্রব্য ইয়াবা, গাঁজা ও ক্রিস্টাল মেথ আইস। তবে কোস্টগার্ড বলছে, নাফনদীতে তৎপরতা বাড়ায় বেশি মাদকদ্রব্য জব্দ হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে টেকনাফ বিসিজি স্টেশনে এসব ধ্বংস করা হয় বলে জানান কোস্ট গার্ডের পূর্ব জোনের টেকনাফ বিসিজি স্টেশনের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাহউদ্দিন রশিদ তানভীর।
নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তানভীর বলেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ১২টি মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে এককভাবে ও র্যাবের সমন্বয়ে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা থেকে মোট নয় লাখ ৬ হাজার ৪৭০টি ইয়াবা ও ৬০ কেজি ৪০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা মাদকের আনুমানিক বাজারমূল্য ৪৫ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ হাজার টাকা বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এ ছাড়া আলামত হিসেবে ৯৮০টি ইয়াবা ও ১৭৫ গ্রাম গাঁজা থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি নয় লাখ পাঁচ হাজার ৪৯০টি ইয়াবা ও ৬০ কেজি ২২৫ গ্রাম গাঁজা ধ্বংসের জন্য কক্সবাজারের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত নির্দেশ দেয়।
মাদক ধ্বংস কার্যক্রমে কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহীন মজিদ, কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ মুখ্য বিচারিক হাকিম আসাদ উদ্দিন মো. আসিফ, শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সিফাত উল্লাহ তাসনিম আলম, টেকনাফ থানার ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং র্যাবের প্রতিনিধিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তানভীর বলেন, নিয়মিত অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মাদক পাচার রোধে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।