জলকেলি উৎসবে মেতেছে রাখাইন পল্লী

জলকেলি উৎসবে মেতেছে রাখাইন পল্লী
রাখাইন সম্প্রদায় মেতেছে ‘সাংগ্রেং’ বা বর্ষ বিদায় উপলক্ষে জলকেলি উৎসবে। রাখাইনদের সবচেয়ে বড় এই উৎসবে তাদের বিশ্বাস মঙ্গল জলে ধুয়ে মুছে যাবে পুরাতন বছরের সকল দুঃখ, কষ্ট, গ্লানি, অপ্রাপ্তি আর অসঙ্গতি। আর নতুন বছর হবে শুচিতা বা নির্মলের। উৎসবটি রাখাইনদের হলেও কালক্রমে এটি কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। এই মধ্য দিয়ে তৈরী হয়েছে সম্প্রীতির এক বন্ধন। যেখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সহ নানা শ্রেণী পেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।

রাখাইন পঞ্জিকা অনুসারে ১৩৮৫ রাখাইন বর্ষের শেষ দিন ছিল গত মঙ্গলবার। আর বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ১৩৮৬ রাখাইন বর্ষ। এই বর্ষ বিদায় ও বরণে কক্সবাজার রাখাইন সম্প্রদায়ের ৭ দিনের সাংগ্রেং বা বর্ষ বিদায় ও বরণ উৎসব পালন করে। সামাজিক নিয়ম মতে, ১৪ এপ্রিল শুরু হওয়া এই উৎসব জলকেলির মধ্যে দিয়ে শেষ হবে ২০ এপ্রিল।
জলকেলি উৎসব এখন ঐতিহ্যবাসী সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। নিজেদের মধ্যে সামাজিক বন্ধন ও ঐক্য তৈরীতে এই উৎসব ভূমিকা রাখে বলে অভিমত রাখাইনদের।
কক্সবাজার রাখাইন সম্প্রদায়ের নেতা মংথেলা রাখাইন জানান, জলকেলি উৎসব রাখাইনদের হলেও এটি কালক্রমে কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। এবার কক্সবাজার শহরের রাখাইন পল্লীতে ১২ টি প্যান্ডেল তৈরী করা হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার জেলার মহেশখালী, ঈদগাঁও, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া, পেকুয়া ও উখিয়ার রাখাইন পল্লী ঘিয়ে অর্ধশত প্যান্ডেলে তিন দিনব্যাপী এ উৎসব চলছে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান জানান, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। দীর্ঘ দিন ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবে প্রতিবারেই পৌরসভার পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়। এবারেও করা হচ্ছে। এই উৎসব রাখাইনদের হলেও এখানে পর্যটক সহ সকলে অংশগ্রহণ করেন। এই উৎসবের সার্বিক সহযোগিতায় পৌরসভা সবসময় পাশে রয়েছে।
উৎসবের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানান, রাখাইনদের অন্যতম এই উৎসব সফল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ করতে পুলিশ ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রাখাইন পল্লীগুলোতে পোষাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোষাকে নজরধারী রয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এই উৎসব শেষ করতে জোরদার করা হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান সবাইকে রাখাইন নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এই উৎসব গুলোতে সরকারের পক্ষ থেকেও সবসময় সহযোগিতা করা হয়। পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তার’ই অংশ হিসেবে রাখাইনদের জলকেলি উৎসবে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনিও রাখাইন সম্প্রদায়ের সাথে তাল মিলিয়ে বলেন এই জলকেলি উৎসবের মধ্য দিয়ে পুরাতন বছরের সকল দুঃখ্য-গ্লানি মুছে নতুন বছর হবে নির্মলের।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.