মেম্বার প্রার্থী সেলিমের পর এবার মারা গেলেন আহত শফিউল আলমও

মেম্বার প্রার্থী সেলিমের পর এবার মারা গেলেন আহত শফিউল আলমও
# চকরিয়ায় নির্বাচনী বিরোধের জেরে গুলি ও কুপিয়ে জখম

চকরিয়ায় ইউপি নির্বাচনী বিরোধের জের ধরে বাড়ি থেকে ঢেকে নিয়ে মোহাম্মদ সেলিম (৩৮) নামের এক মেম্বার প্রার্থীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার তিন ঘন্টা পর গুরুতর আহত শফিউল আলম প্রকাশ চৌকিদার শফিও (৫০) মারা গেছে। মোহাম্মদ সেলিম ঘটনাস্থলে মৃত্যু হলেও শফিউল আলম চমেকে নেওয়ার পথে মারা যান।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাত আটটার দিকে চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের মানিকপুর উত্তরপাড়া স্টেশনে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মোহাম্মদ সেলিম সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে এবং শফিউল আলম একই এলাকার মৃত আবু ছালাম সওদাগরের ছেলে।

নিহত মোহাম্মদ সেলিমের বৃদ্ধ বাবা নুর মোহাম্মদ (৭৫) জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চৌকিদার শফিউল আলম কথা আছে অজুহাত দেখিয়ে বাড়ি থেকে আমার ছেলেকে ঢেকে নিয়ে যায়। এসময় তারা উত্তরপাড়া স্টেশনে একটি চায়ের দোকানে বসেন। ওইসময় অর্তকিত অবস্থায় একাধিক মামলার আসামি জাহেদুল ইসলাম সিকদার ওরফে জাহেদ মেম্বার আমার ছেলেকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তার ছেলের। ঘটনার সময় একসঙ্গে কুপিয়ে জখম করা হয় সেলিমের পাশে বসা চৌকিদার শফিউল আলমকে।
নিহত শফিউল আলমের ছোট ভাই নুরুল আলম জানান, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের উত্তর পাড়া স্টেশনে রাত ৮টার দিকে তার ভাই শফিউল আলম ও মোহাম্মদ সেলিম একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওইসময় অতর্কিতভাবে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদার ও তার ভাগিনা বাবুর নেতৃত্বে ৭-৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী দোকানে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এসময় মোহাম্মদ সেলিম ঘটনাস্থলে মারা যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তার ভাইকে শফিউল আলমকে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তার ভাই।  
নিহত মোহাম্মদ সেলিমের স্ত্রী শফিকা খানম জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মানিকপুর ১নম্বর ওয়ার্ডে তার স্বামী সেলিম ও বর্তমান মেম্বার জাহেদ সিকদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে তার স্বামী অল্প ভোটে পরাজিত হলেও সেই থেকে প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলেন জাহেদ সিকদার। গত কয়েকদিন ধরে হুমকি দেওয়ায় বাড়ি থেকে বের হননি তার স্বামী। শফি চৌকিদার মোবাইলে কল দিয়ে ডেকে নিয়ে যান সেলিমকে। এরপর কুপিয়ে হত্যা করে স্বামী সেলিমকে। গুলি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে আলোচিত জোড়া হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টা পরও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। হত্যার মুল কিলার ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদার ও তার ভাগিনা বাবুকে গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না। পুলিশের তৎপরতা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন? জনসম্মুক্ষে ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদারের নেতৃত্বে দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা করলেও তাকে এখনো গ্রেফতার না করায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকায়। নিহতদের পরিবারের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা।
সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক জানান, তার ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে দুইজনকে জখম করেছে। ঘটনাস্থলে মোহাম্মদ সেলিম মারা যায় অপরজন শফিউল আলম প্রকাশ শফি চৌকিদারকে আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে যান।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুইজনের মৃত্যুর ঘটনায় আসল খুনিদের ধরার জন্য পুলিশের একাধিক টীম মাঠে কাজ করছেন। দুইজনকে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে পাঠানো হয়েছে। 
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.