# নকল বইয়ের কারসাজিতে চলছে বাল্যবিবাহ নিবন্ধন, অভিযোগ পেয়েও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না জেলা রেজিস্ট্রার
পেকুয়ার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভুয়া কাজী মোহাম্মদ শোয়াইবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা আদায়, রেজিষ্ট্রেশন ছাড়াই বিয়ের সনদ প্রদান, একাধিক অবৈধ বই ব্যবহার করে বাল্যবিয়ে নিবন্ধন, কাবিননামা লোপাট ও নকল দেওয়াসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
গত ২২ এপ্রিল টৈটং ইউনিয়নের ভেলুয়া পাড়ার বাসিন্দা, মোহাম্মদ জোবাইদুল হক নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে জেলা রেজিস্ট্রার, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে তিনি দাবি করেছেন, বারবাকিয়া ইউনিয়নে কাজী নামধারী মোহাম্মদ শোয়াইবুল ইসলাম সরকারি নির্ধারিত ফি'র চেয়ে অনেক বেশি টাকা আদায় করছেন, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই বিয়ের সনদ প্রদান এবং প্রকৃত তথ্য গোপন করে রেজিস্ট্রেশন বইয়ে ভুয়া এন্ট্রি করছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। একটি অডিও রেকর্ড'এ শোনা যায় শোয়াবুল ইসলাম একজনের সাথে টাকা নিয়ে দর কষাকষি করছেন।
নাম জানাতে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন, বারবাকিয়ার কাজী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন শারাফাতুল ইসলাম। কিন্তু তিনি কাজী অফিসে থাকেনা। তিনি নিজের ব্যক্তিগত কাজে প্রায় সব সময় বাইরে থাকেন। সহকারী কাজী নামধারী শোয়াইবুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। এই সুযোগে শোয়াইবুল ইসলাম নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন।
তিনি বলেন, স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিয়ে, জালিয়াতি বিয়ে, আইডি কার্ড বানানো, জন্ম নিবন্ধন বানানোর মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে নিবন্ধন করে দিয়ে বাড়তি টাকা আদায় করছেন। এমনকি বিয়ের নকল তুলতে দুই হাজার টাকা ফি নেওয়াসহ নানা অনিয়মের সাথে জড়িত।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে জানান, সরকার যে বই কাজীকে সরবরাহ করে তার চেয়ে তিনগুণ নকল বই ব্যবহার করে অবৈধ বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করে। আইনি ঝামেলা ঠেকাতে আদালতের চাহিদা অনুয়ায়ী নকল বই প্রেরণ না করে মূল বই আদালতে প্রদর্শন করে। ফলে তাদের অপরাধী হিসেবে সনাক্ত করা সম্ভব হয় না। আর আসল বইয়ে ঝামেলাপূর্ণ বিয়ে নিবন্ধন করা যায় না। নকল বইয়ের কারসাজিতেই চলছে তাদের রমরমা ব্যবসা ও বাল্যবিবাহ নিবন্ধন। এসব অবৈধ নিবন্ধনে উভয়পক্ষ থেকে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি-এর চেয়ে বেশি টাকা নেওয়া হয়।
অভিযোগে উঠেছে, পেকুয়া উপজেলায় তিনটি ইউনিয়নে সাবেক নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজি মোশারফের তিন ছেলে নিয়োগ পেয়েছেন। তারা হলেন, মগনামা ইউনিয়নে ছাআহাদাতুল ইসলাম, সদর ইউনিয়নে শাহাদাতুল ইসলাম, এবং বারবাকিয়া ইউনিয়নে শরাফাতুল ইসলাম। যা নিয়মবহির্ভূত ও আইন ভঙ্গের শামিল বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে শোয়াইবুল ইসলামের বিরুদ্ধে জেলা রেজিস্ট্রার বরাবরে অভিযোগ দিলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভুক্তভুগীদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে শোয়াইবুল ইসলামের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জেলা রেজিস্ট্রারের মোবাইল নাম্বারে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।