কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাব পরিচয়ে অপহরনের ৭২ ঘন্টা পর অপহৃত রোহিঙ্গা মো. হাফিজউল্লাহকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। এর আগে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে ২০১৯ সালে বহিষ্কৃত সৈনিক মো.সুমন মুন্সী সহ তিনজনকে আটক করে র্যাব। উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্রও।
রবিবার বিকেলে র্যাব ১৫ এর সহকারি পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) সহকারী পুলিশ সুপার আ. ম. ফারুক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
আটকদের মধ্যে সুমন মুন্সী গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার রাজপাট ইউনিয়েনর ডুমরাকান্দি গ্রামের আকবর আলী মুন্সির ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে এবং তিনি ২০১৯ সালে চাকুরিচ্যুত সেনা সদস্য বলে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১১ জুন রাত ১১ টায় ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মো. রহিমুল্লাহর ছেলে মো. হাফিজ উল্লাহকে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। রোহিঙ্গা এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেনের সহায়তায় ভিকটিমকে নিজ বসতঘর হতে ডেকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায় চক্রটি। পরে অপহৃতের পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপন চান অপহরনকারীরা। এই খবর পেয়ে র্যাব-১৫ ভিকটিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার বিকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি চৌকসদল রঙ্গিখালীতে অপহরণের অন্যতম প্রধান হোতা ডাকাত সর্দার শাহআলমের বাড়িতে হানা দিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুর নামে দুজন সন্দেহভাজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এরপর শনিবার বিকেলে উখিয়ার মরিচ্যা বাজার থেকে বরখাস্ত সৈনিক মোঃ সুমন মুন্সিকে আটক করে। এরপর সুমনের মাধ্যমে অপহরণকারী ডাকাত শাহ আলম, সন্ত্রাসী রাকিব এবং সন্ত্রাসী শিকদারকে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বার্তা পাঠানো হয়। আহবানে সাড়া দেয়নি চক্রটি। এরই প্রেক্ষিতে ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য রবিবার র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও বনবিভাগের ২৫৬ জন জনবল নিয়ে ভিকটিমকে আটকে রাখার সম্ভাব্য গহীন অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। এক পর্যায়ে অপহরণের ৭২ ঘন্টা পরে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশীয় অস্ত্র, ৩ রাউন্ড এ্যমুনেশনসহ র্যাবের ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে।
আটকদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য টেকনাফ থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানানা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এ নিয়ে গত সাড়ে ১৭ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫২ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।