কক্সবাজার মানে প্রথমেই চোখের সামনে ভেসে উঠে ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। কিন্তু পাহাড়-সমুদ্র মিশ্রিত সৌন্দর্যের এই লীলাভূমিতে সমুদ্র সৈকত ছাড়াও রয়েছে অর্ধশত পর্যটন স্পট। যেখানে দিন দিন বাড়ছে পর্যটকদের বিচরণ। পর্যটন সংশ্লিষ্টরাও ওই জায়গাগুলো ঢেলে সাজাচ্ছে ভ্রমণ প্রিয়দের পছন্দের করে তুলতে। এদিকে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের সাথে মাঠে রয়েছে অন্যান্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মেরিনড্রাইভ সহ হিমছড়ি, পাটুয়ার টেক, ইনানী ছাড়াও শুধু সমুদ্র সৈকতেরই রয়েছে একধিক পয়েন্ট। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলার মধ্যে রয়েছে রামু’র ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধবিহারগুলোর মধ্যে ১০০ ফুট দীর্ঘ এশিয়ার সর্ববৃহৎ গৌতম বুদ্ধের মুর্তি, রাবার বাগান, টেকনাফে অবস্থিত দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন-ছেঁড়াদ্বীপ, মহেশখালীর জেটি- আদিনাথ মন্দির, দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া’র বাতিঘর, সোনাদিয়া দ্বীপ, চকরিয়া পাহাড়-লেকে’র সংমিশ্রনে নিভৃতে নিসর্গ, ডুলাহাজারার সাফারী পার্ক, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক সহ অর্ধশত পর্যটন স্পট। এই পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণ প্রিয়দের কাছে নিরাপদ ও আকর্ষনীয় করে তুলছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। বেড়াতে আসা পর্যটকরাও সমুদ্রে সৈকতের পাশাপাশি ভ্রমণে ভিন্নতা পেয়ে আনন্দিত।
রামু’র ১০০ ফুট দীর্ঘ গৌতম বুদ্ধের মুর্তি দেখতে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা নব দম্পতি’র মধ্যে রোকসানা হায়দার জানান, ‘সমুদ্র সৈকতের বাইরেও যে কক্সবাজারে এত সুন্দর জায়গা আছে তা না দেখতে বুঝা যেতনা। আমি অনেকবার কক্সবাজার এসেছি। কিন্তু এবারের ভ্রমণটা সত্যিই মনে রাখার মত।'
মহেশখালীর আদিনাত মন্দিরে ভ্রমণে যাওয়া কুমিল্লা থেকে আসা আকবর হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজার সৌন্দর্য সবসময় টানে। এই শহরে যতবার আসা হয় ততবার সমুদ্র সৈকতে গোসল করা হয়। এবারে পাহাড়ে ভ্রমণ করতে এসে বুঝলাম এর আগে কেন এত সুন্দর জায়গায় আসা হয়নি। আমার মত অন্যসব পর্যটকদের জানাতে চাই ভ্রমণে ভিন্নতা আনুন, দেখবেন আরো ভাল লাগছে। কক্সবাজারে সেই সুযোগ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে’।
সিলেট থেকে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে আসা আরেক পর্যটক রাসেল আহম্মেদ বলেন, 'এবারের ঈদের টানা ছুটিতে সিদ্ধান্ত হলো আর সমুদ্র সৈকত নয় এবার ভ্রমণ করা হবে অন্যান্য পর্যটন স্পট। ডুলাহাজারা সাফারী পার্ক, সোনাদিয়া দ্বীপ ও চকরিয়ার নিভৃতে নিসর্গ এরই মধ্যে ভ্রমণ করা হয়েছে। বাকী আরো কিছু জায়গা ভ্রমণ করব। এগুলো শুধুমাত্র দর্শনীয় জায়গা নয় এর সাথে মিশে আছে ঐতিহ্য। এখানে না আসলে বুঝা যাবেনা এই জায়গাগুলো কত সুন্দর। এখানে জোরদার রয়েছে নিরাপত্তা।'
নিরাপত্তার প্রসঙ্গে কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাস জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুরো জেলায় জোন ভাগ করে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। ট্যুরিস্টরা যেখানেই যাক না কেন তাদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। সব জায়গায় ট্যুরিস্ট পুলিশের হেল্প নাম্বার রয়েছে। বিপদ ছাড়াও পর্যটকদের যেকোন সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এছাড়া পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতে রয়েছে লাইফ গার্ড সহ অন্যান্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীও দায়িত্ব পালন করছে।