সাগরতীরে লাখো ভ্রমণপিপাসুর উচ্ছ্বাস

সাগরতীরে লাখো ভ্রমণপিপাসুর উচ্ছ্বাস
ঈদের টানা ছুটিতে সৈকত শহর কক্সবাজারে বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছেন ভ্রমণপিপাসুরা। সাগরের ৩ কিলোমিটার সাগরতীর জুড়ে শুধু মানুষ আর মানুষ। এসব মানুষ এসেছেন পরিবার-পরিজন কিংবা প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে। তবে ব্যবসা ভালো হওয়ার পাশাপাশি সৈকতে সমুদ্রস্নানে দুর্ঘটনা এড়াতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি পর্যটন সংশ্লিষ্টদের। জেলা প্রশাসন বলছে, দুর্ঘটনা এড়াতে মাঠে কাজ করছেন তারা।

ঈদের ছুটি যতই শেষ হয়ে আসছে ততই পর্যটকের আগমন বাড়ছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফ গার্ড কর্মীরা জানিয়েছে, বুধবার সৈকতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান করছে দুই লাখের কাছাকাছি পর্যটক।
বুধবার (১১ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেখা যায়, লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলী কিংবা তার বাইরে সমুদ্রসৈকত এলাকায় লোকে লোকারণ্য। সাগরতীর জুড়ে শুধু মানুষ আর মানুষ। ভ্রমণে আসা এসব মানুষ সমুদ্রে গোসল, জেড স্কীতে চড়ে সমুদ্র উপভোগ, ছবি তোলা, ঘোড়া পিঠে কিংবা বিচ বাইকে চড়ে সময় পার করছেন।
ভ্রমনপিপাসুরা বলছেন, রোদ-বৃষ্টি কিংবা উত্তাল সাগরে প্রশান্তি খুঁজে পাচ্ছেন। তবে হোটেল ভাড়া অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেক পর্যটকের।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, সাগরপাড়ে এতো মানুষ আগে দেখিনি। বালিয়াড়িতে একটু বসে সমুদ্র উপভোগ করব এই সুযোগও নেই। মানুষের মাথার কারণে ভালো করে সমুদ্রের ঢেউ দেখা যাচ্ছে না। তারপরও এতো মানুষের আনন্দ দেখে নিজেরও আনন্দ লাগছে।
নারায়নগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক জেসমিন আক্তার বলেন, সমুদ্র কার না ভালো লাগে। লম্বা ছুটিতে সমুদ্র উপভোগ করতে ছুটে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে সমুদ্রের কাছে এসে।
আরেক পর্যটক মোবারক হোসেন বলেন, ভ্রমণে এসে ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। যেমন হোটেল ভাড়া অতিরিক্ত আদায় করছে। ৩ দিনের জন্য একটা রুমের ভাড়া ১৮ হাজার টাকা নিয়েছে। যা খুবই অতিরিক্ত মনে হচ্ছে। আমি বলব যারা কক্সবাজার বেড়াতে আসছেন সবাই আগে থেকেই রুম বুকিং করে আসবেন। এসে আর আমার মতো ভোগান্তি কিংবা হয়রানি শিকার হতে হবে না।
এদিকে ঈদের ছুটিতে পর্যটকের আগমন বাড়ায় চাঙ্গা পর্যটন ব্যবসা। হোটেলগুলো ভরপুর পর্যটক। আর সৈকতপাড়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা।
সৈকতের ফটোগ্রাফার নুর হোসেন বলেন, ঈদের ছুটিতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়েছে। যার কারণে ভালো ব্যবসা হচ্ছে। তিদিনই ২ থেকে ৩ হাজার আয় করছি পর্যটকদের ছবি তুলে। এখন আমার মতো সৈকতপাড়ের ৭'শ ফটোগ্রাফারের একই অবস্থা।
শামুক-ঝিনুক বিক্রেতা সালামত উল্লাহ বলেন, অবশ্যই ঈদের ছুটিতে ভালো ব্যবসা হচ্ছে। যেটা আশা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি ব্যবসা হচ্ছে। প্রতিদিনই ৩০ হাজার টাকার ওপরে ব্যবসা হচ্ছে।
কক্সবাজার হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র আবু তালেব শাহ বলেন, কাঙ্খিত ব্যবসা হচ্ছে ঈদের টানা ছুটিতে। পুরো হোটেল মোটেল রিসোর্ট কিংবা রেস্তোরায় এখন জমজমাট ব্যবসা। আশা করি এরকম ব্যবসা আরো কয়েকদিন থাকবে। তবে সৈকতে সমুদ্রস্নানে দুর্ঘটনা এড়াতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম বলেন, পর্যটকদের হয়রানি রোধে ৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষিনক মাঠে রয়েছে। তারা অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আর সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় প্রতিনিয়ত মাইকিং, সচেনতা কিংবা নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে আমিও সৈকত এলাকায় রয়েছি, প্রতিনিয়ত লাইফ গার্ড কর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে যাতে সমুদ্রস্নানে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
উল্লেখ্য, গত ৫ দিনে কক্সবাজারে আগমন হয়েছে ৫ লাখের মতো পর্যটকের।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার


পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম

© 2025 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.