টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের এখনো কাটেনি আতঙ্ক

টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের এখনো কাটেনি আতঙ্ক
আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল। ১৯৯১ সালের এইদিনে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে লন্ডভন্ড করে বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছিল বৃহত্তর চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চল। এই অঞ্চলে ভয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের স্বপ্ন যেন দু:স্বপ্নে পরিণত হয়েছিলো। বিশেষ করে চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুন্ড, মিরসরাই, হাতিয়া, স›দ্বীপসহ কক্সবাজারের চকরিয়া. পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালীর উপকূলীয় এলাকা। প্রাণ হারিয়েছিল অন্তত ২ লাখ মানুষ। বঙ্গোপসাগর থেকে তীব্র গতিতে উঠে আসা জলোচ্ছাসে চোখের পলকেই লন্ডভন্ড হয়ে যায় হাজার হাজার উপকূলবাসীর স্বপ্ন।

জানা যায়, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের পর নির্মাণ করেনি স্থায়ী বেড়িবাঁধ। টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের এখনো আতঙ্ক কাটেনি। অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ থাকলেও ভেঙ্গে গেছে বেশির ভাগ এলাকায়। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবীতে এখনো আন্দোলন ও মানববন্ধন করে যাচ্ছেন উপকূলীয় এলাকার মানুষ গুলো। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণের আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার উপকূলীয় এলাকাতে একাধিক আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও চকরিয়া উপজেলার বদরখালী, বিএমচর ও কোনাখালী ইউনিয়নে তিনটি মুজিব কিল্লার নির্মাণ কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে। এসব মুজিব কিল্লার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের আশ্রয়ের ঠিকানা তৈরী হবে। এর পাশাপাশি গবাদি পশু গুলোর রাখার ব্যবস্থা রয়েছে।  
১৯৯১ সালের (সোমবার) ২৯ এপ্রিল কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপকূলের মানুষের জন্য ছিল এক ভয়ানক রাত। ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস আর প্রায় ২০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছাস রাত প্রায় ১২টা নাগাদ উপকূলে আছড়ে পড়ে হারিকেনের শক্তি সম্পন্ন প্রবল এক ঘূর্ণিঝড়। কুতুবদিয়ার ওপর দিয়ে ১২ থেকে ২০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছাস আঘাত হানে। এতে কুতুবদিয়াসহ লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল কক্সবাজার, মহেশখালী, চকরিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, সীতাকুন্ড পতেঙ্গাসহ উপকূলীয় এলাকা। বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংসস্তপে পরিণত হয়েছিল। উপকূলীয় এলাকায় প্রাণ হারায় মোট ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি মানুষ ও অসংখ্য গবাদিপশু মারা যায় কুতুবদিয়ায়। নিখোঁজ হয় অসংখ্য মানুষ। দ্বীপের এমন কোনো বাড়িঘর নেই যেখানে মানুষ মারা যায়নি। বছর ঘুরে দিনটি এলে কান্নার রোল পড়ে স্বজন হারা বাড়িতে।
এদিকে ভয়াল ২৯ এপ্রিল উপলক্ষে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দোয়া, মিলাদ ও আলোচনা সভা পালন করা হবে।

আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার


পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম

© 2025 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.