নিজেদের ভবনেই ঝুঁকিতে দমকল কর্মীরা

নিজেদের ভবনেই ঝুঁকিতে দমকল কর্মীরা
রোকসানা সুমি :

জরাজীর্ণ ভবন, দেওয়ালে ফাটল ধরেছে, খসে পড়েছে পলোস্তরা, কোথাও ভেঙে গেছে পিলারের অংশ। এমনই অবস্থা দাঁড়িয়েছে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবনের। ঝুঁকি নিয়ে সেই ভবনেই চলছে দমকল কর্মীদের নিত্যদিনের কাজ। 
দিনরাত যেকোন দুর্ঘটনার খবর পেলে যারা মুহুর্তে জীবন বাজি রেখে ছুটে যান উদ্ধারকাজে, তাদের এমন বেহাল ভবনে দেখে বিস্ময় সচেতন নাগরিকদের। 
কলিমউদ্দিন নামক এক পথচারী বলেন, 'আমি চাকরীসুত্রে ৩ বছর কক্সবাজার থাকি। প্রায় সময় এই পথ দিয়ে যাতায়াত করি। ফায়ার সার্ভিসের ভবনটি আমি আসার পর থেকেই দেখছি ভাঙা ভাঙা। দেখতেও খারাপ লাগে।' 

শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা মো: মোস্তাক বলেন, 'ভবনটি দেখলে খারাপ লাগে। হঠাৎ কোন ভূমিকম্প হলে ধসে পড়তে পারে ভবনটি। তারা আমাদের বিপদে এগিয়ে আসে, কিন্তু তাদের বিপদে এগিয়ে যাবে কে? দ্রুত ভবনটি সংস্কার করা দরকার।'
 কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়ার বাসিন্দা, কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, 'যারা অন্যের জীবন রক্ষা করার দায়িত্বে নিয়োজিত তারা নিজেরাই জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। যারা অন্যদের জীবন বাঁচাবে এখন তাদের জীবন বাঁচানো জরুরি হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়টিতে জোর দেওয়া উচিত। তাদের জন্য দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করার দাবি জানাই।'
জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে ফায়ার সার্ভিস ভবনটি নির্মিত হয়। সময়ের পরিক্রমায় ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্কার হয়নি ভবনটি। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ও বসবাস অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে এটি। 
নিয়ম অনুসারে শহরের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেয় ফায়ার সার্ভিস। অথচ যদি কোনো পদক্ষেপ নিতে হয় 'নিজেদের ভবনটিকেই আগে সংস্কার করতে হবে' বলে মন্তব্য করেন কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারি পরিচালক অতীশ চাকমা। 
তিনি বলেন, 'উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অনেক আগেই ঝুঁকির বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরা যারা মানুষের যেকোনো বিপদে ছুটে যাই, জনগণকে রক্ষা করি, তারা নিজেরাই ঝুঁকির মধ্যে আছি। বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক।২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিলের ভূমিকম্পে ভবনটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ধ্বসে যায় সামনের একাংশ। ভেঙ্গে যায় ছাদের বিভিন্ন অংশ। ফাটল দেখা দেয় ভবনের গায়ে। কাগজে কলমে এটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হলেও বাস্তবে হয়নি।
তিনি আরও বলেন, 'প্রশাসনিক কিছু জটিলতা থাকার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই কাজ করতে হচ্ছে। আশা করছি, অচিরেই এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।'
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.