সমুদ্রের ঢেউ জয়ে প্রস্তুত হচ্ছে সার্ফাররা

সমুদ্রের ঢেউ জয়ে প্রস্তুত হচ্ছে সার্ফাররা
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ৭ম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো প্রশিক্ষণ ও বাছাই কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ সার্ফিং এসোসিয়েশন। ৪টি ক্লাবের ৪০ জন নারী—পুরুষ ও শিশু সার্ফাররা প্রশিক্ষণ ও বাছাই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে। সার্ফাররা বলছে, সার্ফিংয়ের মাধ্যমে লাল—সবুজের পতাকাকে বিশ্ব দরবারে তুলে প্রস্তুত হচ্ছেন তারা। আর সার্ফারদেরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের জন্য প্রশিক্ষিত করে তুলে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ সার্ফিং এসোসিয়েশন।

বিশাল বিশাল ঢেউ; ছুটে আসছে তীরের দিকে। সেই ঢেউয়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে একেক জন অদম্য তরুণ। রয়েছেন তরুণীরাও। অবলীলায় ঢেউয়ের পর ঢেউ পেরিয়ে অনন্ত জলরাশির দিকে ছুটে চলা। বড় বড় ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লাফিয়ে উঠছেন আর নামছেন। মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।  
নারী সার্ফার ফাতেমা আক্তার বলেন, সার্ফিংয়ের পাশাপাশি পড়ালেখাও চালিয়ে যাচ্ছি। অন্যসব খেলা থেকে সার্ফিং আমার কাছে খুবই প্রিয়। এখন প্রস্তুতি নিচ্ছি ৭ম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতার জন্য।
আরেক সার্ফার মাহিমা আক্তার বলেন, এর আগে যত প্রতিযোগিতা হয়েছে তখন বাছাই পর্ব ছিল না। কিন্তু এখন বাছাই পর্ব হচ্ছে। তাই বাছাই পর্বে অংশ নিয়েছি। অনেক আনন্দ লাগছে।

সার্ফার মন্নান বলেন, এখন অনেক অনেক ভালো ভালো সার্ফার রয়েছে। তাই প্রতিযোগিতাও বেশ প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক হবে। যার কারণে ভয়ও লাগছে।
দেশের প্রথম সার্ফার জাফর আলম। তিনি দেশে না থাকলেও তার হাত ধরে উঠে এসেছেন রাশেদ, সিফাত, শুক্কুর, কামরুলদের মতো অসংখ্য সার্ফার। তাদের সবারই রয়েছে নিজস্ব ক্লাব। এসব ক্লাবের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে আগামীর সার্ফাররা।
সার্ফিং গালর্স এন্ড বয়েস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সার্ফার রাশেদ আলম বলেন, আমার ক্লাবে ৩০ জন সার্ফার রয়েছে। ৩০ জনের মধ্যে ১৫ জন ছেলে ও ১৫ জন মেয়ে। তাদের ক্লাবে পড়ালেখার পাশাপাশি সপ্তাহে ৫ দিন সার্ফিং প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। আমার ক্লাবের সব সার্ফারই খুব ভালো করছে। আশা করি, এবারের জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা সার্ফাররা ভালো করবে এবং আন্তর্জাতিক সার্ফিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে। 
বাংলাদেশ সার্ফিং এসোসিয়েশনের বোর্ড মেম্বার সার্ফার সাইফুল্ল্যাহ সিফাত বলেন, প্রথমবারের মতো ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক সার্ফিং এসোসিয়েশনের আওতাভুক্ত হয় বাংলাদেশ সার্ফিং এসোসিয়েশন। বর্তমানে দেশে সার্ফারের সংখ্যা শতাধিক। তবে কোন জাতীয় প্রতিযোগিতা করতে হলে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী বাছাই কার্যক্রম করতে হয়। তাই প্রথমবারের মতো এবার সার্ফিং প্রশিক্ষণ ও বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে ৪০ জনের মতো নারী, পুরুষ ও শিশু সার্ফার অংশগ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ সার্ফিং এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী বলেন, আসন্ন ৭ম জাতীয় সার্ফিং টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে শুক্রবার (৩ মে) কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শুরু হয়েছে ৫ দিনব্যাপী সার্ফিং প্রশিক্ষন ও বাছাই কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে বাছাই করা সার্ফাররাই কেবল জাতীয় টুর্নামেন্টে অংশগ্রহন করতে পারবে। চলতি মাসেই ৭ম জাতীয় সার্ফিং টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসোসিয়েশন। 
তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ সার্ফিং এসোসিয়েশন। এ পর্যন্ত ৬টি জাতীয় প্রতিযোগিতা হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। সার্ফারদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনের জন্য প্রস্তুত করে তুলে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ সার্ফিং এসোসিয়েশন।
বাংলাদেশ সার্ফিং এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব মোঃ জেহাদ উদ্দিন বলেন, সাফার্ররা একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের। তাদেরকে সবধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাতীয় প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণের পর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পাঠানোর জন্য সব ধরণের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৬টি জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা শেষ করেছি এবং আগামী ১৭, ১৮ ও ১৯ মে ৭ম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে যাচ্ছি। আশা করি, এবারের প্রতিযোগিতা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক হবে।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার


পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.