পেকুয়ায় হাফেজখানার শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থী বলাৎকারের শিকার হওয়ার অভিযোগ

পেকুয়ায় হাফেজখানার শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থী বলাৎকারের শিকার হওয়ার অভিযোগ
পেকুয়ায় মুজিবুর রহমান (২৮) নামের হাফেজখানার এক শিক্ষকের কাছে এক শিক্ষার্থী বলাৎকারের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষার্থীর বয়স ১১ বছর। 

শনিবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছিরাদিয়া এলাকার ইমাম হোছাইন (র) হাফেজখানায় এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষক মুজিবুর রহমান একই ইউনিয়নের মইয়্যাদিয়া এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের এক সদস্য জানান, রবিবার সকালে আমাদের ছেলে হাফেজখানা থেকে বাড়িতে আসে। সেদিন সে হাফেজখানায় আর ফিরে যায়নি। সোমবার সকালে তাকে হাফেজখানায় পাঠানোর জন্য তাঁর মা প্রস্তুত করে দিলেও সে যেতে চাচ্ছিলোনা। পরে সে তাঁর মাকে হুজুরের শারীরিক নির্যাতনের কথা খোলে বলে। এমনকি গত রমজানেও অনেকবার সে ওই শিক্ষকের কাছে বলাৎকারের শিকার হয়েছে বলে জানায়। 
ভুক্তভোগীর পিতা এ ঘটনা জানার পর সোমবার সকালে উত্তেজিত হয়ে ওই শিক্ষককে হামলার উদ্দেশ্যে হাফেজখানায় যায়। তখন স্থানীয়রা তাকে আটকে রাগ প্রশমণ করার চেষ্টা করে। এতে বলাৎকারের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। 

এদিকে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত রমজান আলী, নুরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন ও আহমদ হোছাইন ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে শিক্ষক মুজিবুর রহমানকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। এরমধ্যে নাসির উদ্দিন হাফেজখানার পরিচালনা কমিটির সভাপতি। 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, থানায় অভিযোগ না দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীর পিতাকে জোর করে বৈঠকে বসাতে চাচ্ছে। এলাকার প্রভাবশালীরা তাঁর কাছ থেকে জোরপূর্বক নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছেন।
এ ঘটনায় পুরো এলাকার মানুষ উত্তেজিত হয়ে হাফেজখানায় আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিয়েছে। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মানিক ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, আমি গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে আটকাই। পরে পরিচালনা কমিটিকে বলে হাফেজখানা ছুটি দিয়ে দিই।
অভিযুক্ত শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, ব্যাপারটি নিয়ে সমাজের মান্যগণ্য মানুষেরা বৈঠকে বসেছে। তাঁরা বিষয়টি সমঝোতা করার চেষ্টা করছে। তাঁরা যে সিদ্ধান্ত দিবে আমি তা মেনে নিব।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াছ বলেন, হাফেজখানার এক শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের কথা শুনেছি। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যদি ওই শিক্ষক বলাৎকার করে থাকেন তাহলে সমঝোতা বা ধামাচাপা দেওয়ার সুযোগ নেই। যারা এ ঘৃণ্য বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করবে তাঁদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

কক্সবাজার


পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.